আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের স্পাইস অফ ইন্ডিয়াতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭ টায় আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাসভায় আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডাবলিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অলক সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরান তেলোয়াত, গীতা পাঠ ও ত্রিপিটক পাঠ এবং জাতীয় সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে শুভ সূচনা করা হয়। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা-বোনদের ও স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী সকল মুক্তিযোদ্ধাদের।
স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ডাবলিন আওয়ামী লীগ, কর্ক আওয়ামী লীগ, ওফেলি আওয়ামী লীগসহ আরও বিভিন্ন অঞ্চলের আওয়ামী লীগের কর্মীরা। সার্বিক তত্বাবধানে ছিল ডাবলিন আওয়ামী লীগ।
আলোচনাসভায় ডাবলিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অলক সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই বিজয়। আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আজকের এই বিজয় দিবস অন্য আবহে পালিত হচ্ছে। কয়েক মাস আগে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের নামে ইউ আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম আমাদের এখানে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কাউন্টি কর্ক থেকে আগত আয়ারল্যান্ডের বাঙালী সম্প্রদায়ের জননেতা, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও এবারের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী রফিক খান তার বক্তব্যে সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করলে অনুপ্রবেশের এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত। তিনি সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ করেন।’
আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের এ বারের আরেকজন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক জসিমুদ্দিন আহমেদ আহ্বায়ক কমিটির সমালোচনা করে বলেন, ‘কমিটিতে কে নাম দিলো, কারা দিলো তা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কেউই জানেন না। এখানে রাজনীতি আয়ারল্যান্ডের কর্মীরাই করবে। অন্য কোনো দেশ থেকে লোক এসে আমাদের রাজনীতি করে দিয়ে যাবে না।’ তিনিও আলোচনার ভিত্তিতে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ডাবলিন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ হোসেন তার বক্তব্যে কমিটির দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন,‘ বিএনপি জামায়াতের অনুপ্রবেশ দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এতে লাভ বিরোধী পক্ষের।’
আরও পড়ুন: কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান বিজয় দিবস-২০১৯ উদযাপন
সভার সভাপতি আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি কাউন্টি কিলকেনি থেকে আগত স্বপন দেওয়ান তার সমাপনী বক্তব্যে কঠোর ভাষায় ইউ আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলামের সমালোচনা করে বলেন, ‘কোন ধরণের গঠনতন্ত্রে নেই স্থানীয়দের সাথে আলোচনা না করে এইভাবে একপেশে দলে বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা।’ তিনি অবিলম্বে এই প্রহসনমূলক আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জনাব কিবরিয়া হায়দার, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান নান্না মিয়া, বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা মো. মানিক ইনজামামুল হক জুয়েল, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল, ওফেলি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান শুভ্র, ডাবলিন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি টিটু খন্দকার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ খন্দকার , আন্তর্জাতিক সম্পাদক মুন্না সৈকত, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, সদস্য সুমন বড়ুয়া ও গিরীশ বড়ুয়া ও আশিকুর রহমানসহ অন্যান্যরা। বক্তারা সবাই দলে অনুপ্রবেশের কঠোর সমালোচনা করেন ও আহ্বায়ক কমিটি আলোচনার ভিত্তিতে গঠন করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রিন্টু ভট্ট্যাচার্য, কর্ক থেকে আগত আওয়ামী লীগের কর্মী আহমেদ রুহেল, মো. সানোয়ার, মো. আবুল খায়ের, জহিরুল ইসলাম, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও আওয়ামী লীগ নেতা নানু আলী।ওফেলি আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুনুর রশিদ, দপ্তর সম্পাদক তামান্না ফারিয়া, সদস্য রাশেদ বখশী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ আর নয়ন। ডাবলিন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রবীর সরকার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাইফুজ্জামান বাবলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রবিন, মো. খালেদ হোসাইন, ধর্ম সম্পাদক খাইরুল ইসলাম পায়েল, সদস্য বাবু, আমিনুল খান, এনামুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা সঞ্জীব সাহা ও মো. শহীদ উল্লাহসহ অন্যান্যরা।
ইত্তেফাক/এএএম