ড. মিল্টন বিশ্বাস
আজ ২১ মে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির জন্মদিন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করেছেন নিজেকে। এর আগে অবশ্য ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের আক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পে দুই বছর মেয়াদে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাইবার প্রচার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ববি ঐ প্রচারণায় যুক্ত ছিলেন। তখন জাতীয় নির্বাচনে অনলাইন প্রচারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আর অনলাইনভিত্তিক প্রচার বা সাইবার স্পেসের মূল দায়িত্বে ছিলেন ববি। সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক মাঠ দখল ও নির্বাচনে জয়লাভেরই কৌশল হিসেবে ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কাজ নিয়ে ‘আপনি জানেন কি’ শিরোনামে ১৭টি প্রামাণ্যচিত্র এবং অন্যান্য সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের তুলনামূলক ১৯টি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি এবং নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে আসার অনুষ্ঠান ‘ইয়াংবাংলা’র পেছনের অন্যতম মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ববি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও আওয়ামী লীগের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ সকল রাজনৈতিক দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ফলে প্রচার-প্রচারণা করে যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচনে জয়ী করার কৌশল গ্রহণ করতে হয় শেখ হাসিনার দলকে। রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নেতৃত্বে একঝাঁক তরুণ অনলাইন মিডিয়া ব্যবহার করে তৃণমূল জনগোষ্ঠীর কাছে নৌকা প্রতীক পৌঁছে দিতে সক্ষম হন।
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। এক্ষেত্রে ‘ইয়াংবাংলা’, ‘জয়বাংলা কনসার্ট’ এবং ‘মুজিব’ সিরিজের কাজের কথা প্রথমেই মনে আসবে। তিনি ভাগ্য পরিবর্তনের আইকন। তিনি আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর ট্রাস্টি এবং সিআরআইর হেড অব স্ট্রাটেজি অ্যান্ড প্রোগ্রাম হিসেবে কাজ করছেন যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করা ববি।
তার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও পরামর্শে পরিচালিত ‘সিআরআই’ ও ‘ইয়াংবাংলা’র ব্যানারে তিনি নতুন জীবনের সন্ধান দিচ্ছেন যুবসমাজকে। নতুন প্রজন্মকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তুলতে নেওয়া অন্যতম কর্মসূচি ‘ইয়াংবাংলা’ সারাদেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। একই সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে করে তুলেছে উজ্জীবিত। এই কর্মসূচির অন্যতম পরিকল্পনাকারী তিনি। তার নির্দেশনায় প্রকাশিত হচ্ছে ‘মুজিব’ নামের একটি শিশুতোষ প্রকাশনা। শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে গ্রাফিক নভেল সিরিজ ‘মুজিব’-৬ পর্বের পর নতুন পর্ব প্রকাশিত হচ্ছে সিআরআই-এর উদ্যোগে। জীবনীভিত্তিক এই প্রকাশনার মধ্য দিয়ে দেশের শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্মের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে এই গ্রাফিক নভেলটি। ইংরেজির পাশাপাশি আরো অনেক বিদেশি ভাষায়ও প্রকাশ পাচ্ছে বইটি। আসলে রাদওয়ান মুজিব রাজনৈতিক কোনো পদে না থাকলেও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি সুপরিচিত নাম। বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় থেকেও তার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ববির ভেতর রয়েছে বঙ্গবন্ধুর মতো জনগণের সঙ্গে মেশার তাগিদ। রয়েছে পরিশ্রমী ও তারুণ্যের প্রাণময়তা। এজন্য লন্ডন থেকে তার এদেশে চাকরি নেওয়া, রাজনীতিতে পরোক্ষভাবে যোগ দেওয়া আমাদের জন্য শুভ সূচনা। দেশের মধ্যে যারা একসময় দুর্নীতি ও নাশকতার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে তাদের মসনদ কেঁপে উঠেছে তার কার্যক্রমে। তিনি মূলত বঙ্গবন্ধুর মতোই তরুণসমাজকে আশাবাদী করে জাগিয়ে তোলার জন্য কাজ করেন। একসময় তার মতো বয়সে বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষকে জাগিয়েছিলেন; ববিও তেমনি নির্বাচনে জয়ী এবং ইশতেহার বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগকে পরামর্শ দিতে সক্ষম। তার ভেতর থেকে বঙ্গবন্ধুর মতোই সম্মোহনী চেতনা স্ফুরিত হচ্ছে। তিনি এদেশে অবস্থান করেই মানুষকে উজ্জীবিত করছেন।
নতুন ও আধুনিক একটি বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। মহামারিকবলিত বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলা করা এ শতাব্দীর ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এই কাজে জয়ী হওয়ার জন্য তরুণ জনগোষ্ঠীর নেতা রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো দরকার।
n লেখক : অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়