চাকরি পাওয়ার প্রথম শর্ত হল ইন্টারভিউয়ে সাফল্য অর্জন। ঠিক এখানেই অনেকে মার খেয়ে যান এবং চাকরি করার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। কেউ যত বড়ো সাহসীই হোন, চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় বুকে একটুও কাঁপুনি ধরেনি এমন মানুষ বিরল! বিশেষ করে পছন্দের কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় প্রত্যেকেই চান প্রথম দেখাটাই বাজিমাত করতে। আর এই প্রথম দেখা মানেই সঠিক পোশাক আর সেই সঙ্গে অবশ্যই সঠিক আচার-আচরণ।
যে কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, সেটি সম্পর্কে ভালভাবে রিসার্চ করুন। আজকাল ইন্টারনেটের দৌলতে নানা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং সাইট থেকে চাইলে আপনি সব তথ্যই পেতে পারেন।
কোম্পানির ফাউন্ডার এবং পার্টনার কারা, টার্ন ওভার কত, কোন কোন সেক্টরে এরা কাজ করেন (যদি একাধিক ব্যবসা থেকে থাকে) – মোটামুটি এই বিষয়গুলো জেনে নিন। এছাড়াও ইন্টারভিউ বোর্ডে কারা থাকবেন, সে বিষয়েও আজকাল অনেক সময়েই কনসালটেন্সি ফার্ম থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। সম্ভব হলে তাদের বিষয়েও খানিকটা রিসার্চ করে নেবেন।
আপনি যে পদের জন্য ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, সেটির দায়িত্ব সম্পর্কে জেনে নেবেন। ধরুন আপনি কোনও মিডিয়া হাউজে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন সাংবাদিক পদের জন্য। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র খবর সংগ্রহ করেই যে সাংবাদিকের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, তা আপনার জানা উচিত।
আপনার বায়োডেটা যেন বড্ড বেশি ভারী না হয়। অর্থাৎ আপনি কোথায় কোথায় আগে কাজ করেছেন, সে সম্পর্কে অবশ্যই যেন বায়োডেটাতে উল্লেখ থাকে, তবে কী কী দায়িত্ব পালন করতে হত আপনাকে সেগুলো নিয়ে যেন রচনা লেখা না থাকে। বরং আপনার কাজের অভিজ্ঞতা ও দায়িত্ব বুলেট পয়েন্টারে লিখতে পারেন।
বায়োডেটা যেন বোরিং এবং ভারী না হয়। ঠিক তেমনই বেশি ক্রিয়েটিভ স্কিল দেখাতে গিয়ে এমন ফরম্যাটেও বায়োডেটা লিখবেন না যাতে তা প্রফেশনাল নয় এমন মনে হয়। আপনার বায়োডেটার প্রিন্ট সাদা-কালোই যেন হয়, ভুল করেও রঙিন করতে যাবেন না।
চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে আপনার বায়োডেটার বাইরের কিছু তথ্যও শেয়ার করুন। যেমন ধরুন আপনার হবি কী কী, আপনি কোন কাজে বেশি পারদর্শী, আগের কাজের কোনও অভিজ্ঞতা ইত্যাদি আপনি গল্পের ছলে শেয়ার করতেই পারেন। খেয়াল রাখবেন, অপ্রাসঙ্গিক কথা বলবেন না।
আপনি যে পদের জন্য ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছেন, সেই কাজটি যে আপনি ভালবাসেন, সে বিষয়ে ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা রয়েছেন, তাদের কথায় কথায় জানিয়ে দিন। শুধুমাত্র আর্থিক দিক থেকেই না, আপনি মানসিক ও আত্মিক দিক থেকেও যে এই কাজটি করে সমৃদ্ধ হবেন – সে বিষয়ে স্পষ্ট করে বলুন।
টাকা পয়সা নিয়ে কোনওরকম সমঝোতা করবেন না। আগের চাকরিখেত্র থেকে কতটা বেশি টাকা পেলে আপনার সুবিধে, সে বিষয়ে স্পষ্ট জানান। তবে এমন কিছু বলবেন না, যা অসম্ভব বা আপনার প্রাপ্য।
ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে শুধুমাত্র প্রশ্নের উত্তর দিয়ে চলে আসবেন না। আজকাল অনেকেই চাকরিপ্রার্থীর কাছে জানতে চান তাদের কোনও প্রশ্ন আছে কি না। সুতরাং সেভাবে নিজের প্রশ্নাবলী তৈরি করে নিন যাওয়ার আগে। আবার আপনার যদি কোনও প্রশ্ন থাকে, সেক্ষেত্রে ইন্টারভিউইয়ারের সম্মতি নিয়ে সেই প্রশ্নটি করুন। মনে রাখবেন এমন কোনও প্রশ্ন করবেন না যা আপনার পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে সন্দেহ জাগায়।
ইত্তেফাক/এফএস