শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফাইভ-জি তরঙ্গ নিলাম হচ্ছে না ডিসেম্বরে, কিন্তু কবে

আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ২১:২৪

চলতি বছরের ডিসেম্বরে হচ্ছে না ফাইভ-জির জন্য তরঙ্গ (স্প্রেকট্রাম) নিলাম। টেলিকম অপারেটরদের নিলামে অংশ নিতে প্রস্তুতি নেওয়ার স্বার্থে মার্চের মাঝামাঝি সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।  ওই নিলামে দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো অংশ  নিলে পর্যায়ক্রমে ফাইভ-জি চালু করা হবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিটিআরসির স্প্রেকট্রাম বিভাগের কমিশনার  প্রকৌশলী এ কে এম শহিদুজ্জামান ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘এখনো দিন নির্ধারণ করিনি। তবে আশা করছি মার্চের মাঝামাঝি নিলাম করতে পারবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিলামের জন্য  আমাদের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করতে হবে। এজন্যে বেইজ প্রাইস নির্ধারণ করতে হবে। এমন আরও কিছু প্রস্তুতি আছে, যেগুলো শেষ করেই নিলাম দিতে হবে।’

এই কমিশনার বলেন, ‘ফোর-জির লাইসেন্স (১৮০০ থেকে ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড ) নিলাম হয়েছে বেশিদিন হয়নি। যেখানে মোবাইল অপারেটররা এখনো সেটা তারা সম্পূর্ণভাবে সক্রিয় করতে পারেনি। তারা কিছুদিন আগেই ফোর-জির নেটওয়ার্ক বাস্তবায়নের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি করেছে। সেগুলোকে প্রতিটা বিটিএসে যুক্ত করার পাশাপাশি স্প্রেকট্রাম যুক্ত করে সক্রিয় করতে অপারেটরগুলোরও সময় দরকার। কারণ, নতুন করে আবার স্প্রেকট্রাম নিয়ে সেগুলোকে নতুন করে সক্রিয় করতেও  খরচ ও সময়ের ব্যাপারও। তাই, আমরা আশা করছি, তারা তাদের ফোর-জি সেবা বাস্তবায়ন সম্পন্ন করে এই নিলামে অংশগ্রহণ করবে।’

ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করতে হলে ন্যূনতম ৬০ মেগাহার্জ স্প্রেকট্রাম নেওয়াটা বাধ্যতামূলক বলে জানান এ কে এম শহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এই নিলামে অংশ নেওয়া অপারেটররা ৬০ থেকে ১০০ মেগাহার্জ স্প্রেকট্রাম নিতে পারবে। যার স্প্রেকট্রাম যত বেশি হবে, তার স্পিড তত বেশি হবে।’

গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মুহাম্মদ হাসান ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘গ্রাহক ও দেশের ডিজিটাল চাহিদা পূরণে গ্রামীণফোন কাজ করে চলেছে। ইতোমধ্যে সর্বশেষ নিলামে গ্রামীণফোন অংশ নিয়েছে। দেশব্যাপী ফোরজি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে চলেছে। একইসঙ্গে ভবিষৎ প্রযুক্তি আনতে অব্যাহতভাবে আধুনিকায়ন করে যাচ্ছে। গ্রামীণফোন পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি হিসেবে ভবিষ্যতে ঘটতে পারে।’

বাংলালিংকের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশনস অ্যান্ড সাস্টিনিবিলিটি আংকিত সুরেকা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসি'র সঙ্গে আলোচনা করছি। এখনো এই ব্যাপারে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। দেশের টেলিকম খাত ও গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় রেখে আলোচনা চালিয়ে যাবো।’

রবির করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স প্রধান শাহেদ আলম ইত্তেফাক অইনলাইনকে বলেন, ‘ফাইভ-জির জন্য আমরা পুরোপুরিই প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের অপেক্ষা করতে হবে বিটিআরসির নিয়মনীতির ওপর। কারণ স্প্রেকটামের দাম, নীতিমালা সবকিছুর পরেই আসলে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো আমরা ফাইভ-জির তরঙ্গ নিচ্ছি কি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কে সেবা উন্নীত করতে হলে আমাদের আরও ডেপথ নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। যেখানে পুরো বিষয়টাই ফাইভার অপটিক ক্যাবলের ওপর নির্ভর করে। তাই ফাইভারের দামের বিষয়টাও এখানে মাথায় রাখতে হবে।’

আগামী বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তরঙ্গ নিলাম হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ইত্তেফাক অইনলাইনকে বলেন,  ‘মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে আগামী ১২ ডিসেম্বর দেশে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভজি চালু হবে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি উদ্ববোধন করবেন।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের টেলকো সেক্টরের স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ করে এই সময় নির্ধারণ করেছি। মার্চে তারা এই নিলামে অংশ নেবে। এই স্পেকট্রাম নিলামের পর তারা তাদের প্রস্তুতি শেষ করে সেটা রোলআউট করবে।’

ইত্তেফাক/এনই

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন