শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

৩য় ধাপের ইউপি নির্বাচন: জয়ের পাল্লায় এগিয়ে স্বতন্ত্ররা 

আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২১, ০২:০৩

তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জয়ের পাল্লায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছে। বেশিরভাগ উপজেলায় এবার ভালো করেছে স্বতন্ত্ররা। অন্যদিকে এই ধাপে তেমন বেশি সুবিধা করতে পারেনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। গত রবিবার সারাদেশে এক হাজার ইউপিতে তৃতীয় ধাপে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটের আগেই ১শ ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়ে যায়। ফলে ৯শ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৪৪৪টি ইউপিতে জয়লাভ করেছে। আওয়ামী লীগ জিতেছে ৪২৫ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১শ বাদে) ইউপিতে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ জিতেছে ৫২২টি ইউপিতে অন্যন্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় পার্টি (জাপা) ১৭টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, জমিয়তে উলামায়ে একটি করে ইউপিতে বিজয়ী হয়। 

ভোট সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৬২জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গত রবিবার ভোটের দিনেই ৮জনের প্রাণহানি হলেও ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার দাবি করেছেন, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনটি সহিংসতাহীন একটি মডেল। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে। মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি ভোট বর্জন করায় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা (চেয়ারম্যানের সাথে মেম্বার) বিনাভোটে নির্বাচিত হওয়ার প্রতিযোগিতার কারণেই সহিংসতা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তিনধাপে ২৫৪ জন ইউপি চেয়ারম্যান বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই মেম্বার প্রার্থীরাও। তিনধাপে ৮৩৪ জন মেম্বার ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬১৪ জন সাধারণ সদস্য এবং ২২০জন সংরক্ষিত সদস্য।

গত রবিবার তৃতীয় ধাপের ১০০০ ইউপির মধ্যে ১০০ জন চেয়ারম্যান ভোট ছাড়াই নির্বাচিত। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সদস্য হন ৩৩৭ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য ১৩২জন। গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ৮৩৩টি ইউপির মধ্যে মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৮১জন, সংরক্ষিত নারী সাধারণ সদস্য পদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এর আগে গত ২০জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর দু’দফায় প্রথমধাপে ৩৬৫টি ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হয়। গত ২০ জুন অনুষ্ঠিত ২০৪টি ইউপির মধ্যে ২৮জন চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এছাড়াও ভোট ছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে ৫ জন এবং সাধারণ সদস্য হিসাবে ২৯ জন নির্বাচিত হন। এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথমধাপের স্থগিত ১৬১ ইউপির মধ্যে ৪৫জন চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত সদস্য ৭জন এবং সাধারণ সদস্য ৪৫জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। 

এই পর্যন্ত ২২শর মতো ইউপির ভোট সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১২৭৮টি ইউপিতে জয়লাভ করেছে। এর মধ্যে ভোট ছাড়াই ২৫৪ জন নির্বাচিত হন। অন্যদিকে সাড়ে ৮৬০টির মতো ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্রদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও বিএনপি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। বাকিরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের। এর মধ্যে জাপা ৩০টিতে জয়লাভ করে। জাতীয় পার্টি-জেপি-৫টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৫টিতে। বাকিগুলো জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে দলের প্রার্থীরা বিজয়ী হন।

গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথমধাপে ৩৬৫টি ইউপির ভোট সম্পন্ন হয়। গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয়ধাপে ৮৩৩টি ইউপির ভোট হয়। সর্বশেষ ২৮ নভেম্বর ১ হাজার ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থধাপে ৮৪৩টি ইউপি এবং ৫ জানুয়ারি ৭০৭ ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

ইত্তেফাক/এসএ