সিলেট শহর এলাকার ইউসুফ নামের এক লন্ডন প্রবাসীর সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে পরিবারের সম্মতিতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ে হয় খুশি বেগমের (১৫)। স্বামীর অবর্তমানে নিজ এলাকা ছাতকের গৌরিপুরের মহিউদ্দিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। পরবর্তীতে খুশি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মহিউদ্দিন।
সে মোতাবেক রাতে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান মহিউদ্দিন। হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিন পর ওই ঘটনার রহস্য উন্মোচনসহ মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শনিবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গত ১৭ নভেম্বর নিখোঁজ হয় খুশি বেগম। নিখোঁজের চারদিন পর স্থানীয়রা ২১ নভেম্বর গ্রামের একটি ধানক্ষেতে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ দেখতে পেয়ে তার বাড়িতে খবর দেন। তাৎক্ষনিকভাবে বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি নিখোঁজ খুশির বলে শনাক্ত করেন।
এরপর স্থানীয় থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা কবির মিয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় হত্যা মামলা করেন। একপর্যায়ে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মহিউদ্দিনের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানাধীন কেডিএস এলাকা থেকে মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মহিউদ্দিন সিআইডির কাছে স্বীকার করেছেন, তার সঙ্গে নিহত খুশি বেগমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বেশ কিছুদিন ধরে খুশি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। মহিউদ্দিন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি পরিবার ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে প্রকাশ করার হুমকি দেয় খুশি।
তখন মহিউদ্দিন ১৭ নভেম্বর রাতে খুশিকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তা ধর বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত কিনা এবং এই কাজে পরোক্ষভাবে কেউ সহযোগিতা করেছে কিনা এসব বিষয় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।