বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বাঘায় আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর বিদ্রোহী প্রার্থীর হামলা 

আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৫১

রাজশাহীর বাঘায় ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে দলীয় নেতাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বাউসা টলটলিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় পুলিশ রাতে বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফানসহ চারজনকে আটক করেছে। রবিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন। 

এ ঘটনায় প্রায় ১০ জন আহত হন এবং চারটি মোটর সাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় বাউসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক  মুস্তাফিজুর রহমান (৩০) ও  কাজল (২৫) কে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন, দলীয় প্রার্থী শফিকুর রহমান ও মজিবুর রহমান সহ অন্যান্যরা  সাময়িক ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করেন বলে নিশ্চিত করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ ডিসেম্বর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন- আড়ানী, বাউসা এবং চকরাজাপুর ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার রাতে বাউসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক নুর মোহাম্মদ তুফান-কে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করতে যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল , যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানা তিলু, অধ্যক্ষ নছিম উদ্দিন, মজিবুর রহমান , বাঘা পৌর সভার প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু, দলীয় প্রার্থী শফিকুর রহমান, বাউসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন ও আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুজ্জামান সাইদ সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ। 

এ সময়  নুর মোহাম্মদ তুফান তাদের সঙ্গে দেখা না করে, উল্টো তার সমর্থিত লোকদের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী মসজিদে মাইকিং করান যে, তার বাড়িতে বহিরাগত লোকজন ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে। এ খবর শুনে তুফানের লোকজন সহ প্রতিবেশী জামাত-বিএনপির লোকজন ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে মৌলবাদী কায়দায় উপজেলা আ’লীগের রাজনৈতিক নেতাদের ওপরে অতর্কিত হামলা চালান। 

এদিকে মোবাইলে খবর পেয়ে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে যান। অত:পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন এবং হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফান(৬০), জয়(২০), উজ্জল(২৬), এবং আশিক(২৫) কে আটক করেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। 

ওসি জানান, এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী  শফিকুর রহমান মোটর সাইকেল ভাংচুর  ও অতর্কিত হামলার অভিযোগ এনে ওই রাতেই  ৫১ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মলিন-সহ অসংখ্য জামাত-বিএনপি সমর্থিত  লোকজনকে আসামী করা হয়েছে। এ ছাড়াও অজ্ঞাত নামা আরও ১৫-২০ জন আসামী রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবু বলেন, নুর মোহাম্মদ তুফান ভাই আমাদের দলীয় নেতা। তার মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিষয়ে আমি কয়েক দফা কথা বলেছি। সর্বশেষ আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুজ্জামান সাইদ ভাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চেয়ে ছিলেন। এ জন্যে শনিবার রাত ৮ টার সময় তুফান ভাই এর বাসায় যওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি না যাওয়ার এক পর্যায় রাত ৯ টার সময় তাকে ফোন করলে তিনি আসছি বলে মোবাইল বন্ধ করে দেন। 

ঘটনার এক পর্যায় আমরা তার বাসায় যাই। এরপর তাকে বাহির থেকে ডাকা হলে তিনি দেখা করবেন না বলে জানান। এ সময় আমরা উপজেলা নেতৃবৃন্দ তাকে জানালার কাছে এসে পাঁচ মিনিট কথা বলার অনুরোধ জানালে মুহূর্তের মধ্যে পার্শ্ববর্তী মসজিদ থেকে তার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে বলে লোকজন ডাকা হয়। মাইকিং শুনে তার লোকজন সহ ঐ এলাকার জামাত-বিএনপির সমর্থিত লোকজন এসে আমাদের উপরে হামলা চালায়। আমরা স্বপ্নেও কল্পনা করিনি, তুফান ভাই আমাদের সঙ্গে এমনটি আচরণ করবেন। 

 

 

 

ইত্তেফাক/ইআ