ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় গত তিন দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে ধানসহ বিভিন্ন রবি শস্যের ক্ষেতে পানি জমেছে। এছাড়া দমকা বাতাস ও ভারী বৃষ্টির কারণে হেলে পড়েছে আমন ক্ষেতের ধানগাছগুলো। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলায় চাষ করা অন্যান্য রবি শস্যেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমন ধানগাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। নুয়ে পড়া গাছগুলোর নিচেই বৃষ্টির পানি জমে আছে। এ ছাড়া বৃষ্টিতে রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে শিয়ালকাঠী গ্রামের কৃষক মনির গাজী বলেন, বৃষ্টিতে অনেক ধান হেলে পড়েছে। অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে যাবে এবং রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষি কাজ করে লোকসানে আছি। তবে এবার আমনের ধান দেখে লোকসানের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। ঝড়বৃষ্টির কারণে চাষাবাদের খরচের ধারদেনা কাটিয়ে লাভের মুখ দেখা যাবে না।
বর্গাচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০ শতক জমিতে খেসারী, করোল্লা ও ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন বীজ কিনে চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ক্ষেত পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রে জানাগেছে, এ বছর পৌর সভাসহ উপজেলার বাকি পাঁচ ইউনিয়নে ৯হাজার ৪শত হেক্টর জমিতে আমন ধান, প্রায় ৪শত হেক্টর রবি শস্য এবং ২হাজার ৫০হেক্টর জমিতে খেসারী চাষ করা হয়েছে। আবাদ করা রবি শস্য অসময়ে বৃষ্টির কারণে প্রায় ৫০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দমকা হাওয়ার কারণে আমন ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়লেও তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে ডালের আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। আমরা উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের সবসময় কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক সীমা রানী ধর জানান, আমন ধানতো প্রায় পাকার পর্যায়। সম্পূর্ণ না পাকলে কাটার নির্দেশনাও দেওয়া যায়না। তবে রবি মৌসুমে যে সকল চাষিরা সবজী চাষের উদ্যোগে নিয়েছেন তাদের আর কয়েকটা দিন পরে তা চাষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।