বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ভালো বেতনের কথা বলে ভুক্তভোগীদের ড্যান্সবারে বিক্রি করা হতো

আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:০২

রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে মানবপাচারকারী চক্রের তিন নারীসহ ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভারতের আধারকার্ড, প্যানকার্ড, মোবাইল এবং মানবপাচার সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- ঢাকার সেকেন্দার হোসেন (৩৫), যশোরের মো. আসাদুজ্জামান ওরফে আকাশ (২৮), নরসিংদীর নুর মোহাম্মদ ওরফে আলীফ (২৮), যশোরের মোসা. বুলবুলি বেগম (২২), নেত্রকোনার রুবি আক্তার (৩১)  ও একই জেলার কলি আক্তার (২০)।

গত ২৯ ডিসেম্বর একজন ভিকটিমের মা র‌্যাব-৪-কে ফোন করে জানায়, তার মেয়েকে পার্শ্ববর্তী দেশে মিডিয়া জগতে কাজ করার কথা বলে যেকোনো সময় পাচার করে দেবে। এ খবরের ভিত্তিতেে র‌্যাব-৪ ঢাকা মহানগরীর দারুস সালাম থানার রেড়িবাধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানায়,  রুবি ও কলি ৪ বছর আগে পাচারকারীর কথায় প্রতারিত হয়ে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে গিয়েছিল। পার্শ্ববর্তী দেশে যাওয়ার পর তাদের একটি ড্যান্সবারে বিক্রি করে দেওয়া হয়।  ডান্সবার থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে তারা। ড্যান্সবারে থাকা অবস্থায় পলাতক আসামি সোহাগের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। সোহাগ মাঝে মাঝেই পাচার করার উদ্দেশ্যে নারী নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে যেত। গত অক্টোবর রুবি ও কলি আবার পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে চাইলে সোহাগ তাদেরকে মেয়ে যোগাড় করে দিতে বলে। পাচারের জন্য একজন যোগাড় করার পর চক্রের মূলহোতা সেকেন্দারের সঙ্গে রুবি ও কলির হয়। 

উদ্ধার করা টাকা ও মোবাইল

এই চক্রটি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা আরও জানায়, ভিকটিমদের রংপুর, দিনাজপুর, ফেনী, কুমিল্লা, নবাবগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করে পার্শ্ববর্তী দেশে উন্নত চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়। পার্শ্ববর্তী দেশের চক্রের সদস্যরা ভিকটিমদের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে। পার্শ্ববর্তী দেশে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য দীপক খোকা মুম্বাইতে সেফহোমে ভিকটিমদের আটক রাখার মূল দায়িত্ব পালন করে। এ কাজে সহযোগিতা করে মারিয়া ও তামান্না। ভুক্তভোগীদেরকে অবৈধভাবে স্থলপথে সীমান্ত পারাপার করানো হত। তারা কয়েকটি ধাপে পাচারের কাজটি সম্পাদন করতো। এ চক্রের মূলহোতা সেকেন্দার গ্রেফতারকৃত আসামি আসাদুজ্জামান ও বুলবুলি বেগমের মাধ্যমে অল্প বয়সী তরুণীদেরকে পার্শ্ববর্তী দেশে ভাল বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখাতো। প্রলুব্ধ ভিকটিমদের পরবর্তীতে দেশীয় সীমান্তবর্তী এজেন্ট পলাতক আসামী সোহাগ ওরফে সাগরের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হত। সোহাগ ভিকটিমদের সীমান্তবর্তী সেফ হাউসে রাখতো। সুবিধাজনক সময়ে লাইনম্যানের মাধ্যমে তাদেরকে বেনাপোল সীমান্ত এলাকা দিয়ে পার করে ভারতীয় দালাল দীপকের কাছে বুঝিয়ে দিত।

 

ইত্তেফাক/ইউবি