ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নবীনগরে চাঁদা না দিলে লোকজনের দোকানপাট ও বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এতে ‘আগুন আতঙ্কে’ রয়েছেন এলাকার মানুষ। থানায় জিডি করেও প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
গতকাল বুধবার ভোর রাতে নবীনগর পৌর এলাকার পশ্চিম পাড়ায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোশারফ হোসাইনের বাসভবন, পৌর এলাকায় বসবাসকারী সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মো. সাদেক মিয়ার বাসভবন ও নবীনগর বাজার কমিটির সভাপতি মো. মনির হোসেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে একটি প্রাইভেট কার, দুটি মোটরসাইকেলসহ ৫০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়াও গত সোমবার রাতে নবীনগর সদর বাজারের আদালত মার্কেটের দুটি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে এই আগুনের ঘটনা ঘটে। পুড়ে যাওয়া দোকান দুটি হলো আদালতপাড়ার সালেহ আহমদ খানের খান পেপার হাউজ ও জগদীশ ঘোষের স্যানিটারি ও ফলের দোকান। আগুনে দোকান দুটির প্রায় ৫ লাখ টাকার মালপত্র পুড়ে গেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের চেষ্টায় আধা ঘণ্টার মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো জানা যায়নি। আগুন নেভানোর সময় লুটপাটের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে।
চাঁদাবাজির এই নতুন কায়দায় ‘আগুন আতঙ্কে’ দিনাতিপাত করছেন ব্যবসায়ীরা। থানায় জিডি করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। নবীনগর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মনির হোসেন, ব্যবসায়ী শেখ জামাল উদ্দিন, নারায়ণ চন্দ্র কর, ওয়ালী উল্লাহ ওরফে শাহ জালাল জানান, তাদের কাছে গত কয়েক মাস ধরে ফোনে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। চাঁদা না দিলে দোকান পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
তারা জানান, ০১৭৭২৯২৩০১৪, ০১৪০৪৯৯৩১০৬, ০১৭৭২৯২৩০১৪ নম্বর থেকে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়। টাকা না পাঠালে দোকান পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। নবীনগর থানায় হুমকির বিষয়ে কয়েকটি জিডি হয়েছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রশিদ বলেন, দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দুটি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেট কার পুড়েছে শুনেছি। আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগেও এলাকায় চাঁদা চেয়ে চিঠি দেওয়া ও ফোন করা হতো। টাকা না দিলে দোকান ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হতো। কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর আবারও চাঁদাবাজি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী।