শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

উত্তপ্ত কাজাখস্তান

উভয় সংকটে পুতিন 

আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৩৮

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির জেরে কাজাখস্তানে চলমান বিক্ষোভ অব্যাহত। এনিয়ে দেশটির সরকারের পতন ঘটেছে। তবে এতে বিক্ষোভ দমেনি। 

রাশিয়ার দক্ষিণ সীমান্তে প্রতিবেশী দেশের এই অবস্থা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য যন্ত্রণাদায়ক। রাশিয়া কাজাখস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে এবং সমস্ত রুশ-মানববাহী মহাকাশ মিশনের লঞ্চ বেস হিসেবে দেশটির বাইকনুর কসমোড্রোমের ওপর নির্ভর করে। 

এছাড়া মধ্য এশিয়ার এই দেশটিতে উল্লেখজনক সংখ্যক রাশিয়ানের বসবাস। কাজাখস্তানের জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ জাতিগতভাবে রাশিয়ান।  

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর কাজাখস্তান ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। দেশটি যখন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অংশ তখন ১৯৮৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন নুর-সুলতান নজরবায়েভ। তখন থেকে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজাখস্তানের শাসনক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখেন।

এরপর এক নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট হন, যে নির্বাচনে কেউ তাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি।  

বহু বছর শাসনের পর নজরবায়েভ ২০১৯ সালে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। সে সময় তার বিরুদ্ধে বিরল এক গণবিক্ষোভ হয়েছিল। ধারণা করা হয় এই পদত্যাগের মাধ্যমে তিনি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন।

তবে ক্ষমতায় না থাকলেও নজরবায়েভ লোকচক্ষুর অন্তরালে খুবই প্রভাবশালী। এমন একটি রূপান্তর মডেল সেই সময়ে পুতিনের কাছে আবেদন করতে পারে, কিন্তু আজ এটি কম আশাব্যঞ্জক দেখাচ্ছে। 

ইউক্রেনের নিয়ে রাশিয়া এমনি জটিল খেলায় আচ্ছন্ন। এরমধ্যে কাজাখস্তানের এমন পরিস্থিতি সম্ভবত রাশিয়ার জন্য একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি।

ইউরেশিয়ার জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক জাছারি উইটলিনের আশা করছেন, দেশটিতে বিক্ষোভ দমাতে মস্কো কাজাখ অভিজাতদের সঙ্গে তার শক্তিশালী ব্যক্তিগত সম্পর্ক ব্যবহার করবে।  

ব্যবসায়ের জন্য কাজাখ ছিল আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ। তবে গত কয়েকদিন ধরে চলা অস্থিতিশীল ঘটনা কাজাখস্তানের খ্যাতিকে ক্ষুন্ন করেছে। কাজাখের এমন পরিস্থিতি তাই মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে পুতিনের।

এদিকে কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ বলেছেন '২০ হাজার দস্যু' দেশটির প্রধান শহর আলমাটিতে হামলা চালিয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর এই শহরটিতেই প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। 

কাসিম-জোমার্ট এই হামলার জন্য, বিদেশী প্রশিক্ষিত 'সন্ত্রাসীদের' দায়ী করেছেন। তবে তিনি এক্ষেত্রে কোন প্রমাণ দেননি। 

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত ২৬ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৮ জন নিরাপত্তা রক্ষী নিহত হয়েছে বলে জানান তিনি। 

এদিকে দেশটির  চলমান বিক্ষোভ দমনে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন বাহিনী সেখানে পৌঁছেছে। কাজাখ প্রেসিডেন্টের অনুরোধে এই বাহিনী বিক্ষোভ দমনে সহায়তা করবে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। তথ্যসূত্র: বিবিসি, সিএনএন। 

ইত্তেফাক/এসআর