গোপালপুরে প্রসূতিকালীন ছুটি নিয়ে মহিলা শিক্ষকদের হয়রানির ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এ তদন্ত করেন। সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে প্রসূতিকালীন ছুটি নিয়ে মহিলা শিক্ষকদের হয়রানি, সরকারি চাকরি শৃঙ্খলাবিধি ভঙ্গ এবং প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সুনাম ক্ষুণ্নের অভিযোগে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এ তদন্ত রিপোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠায়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের একটি সূত্র খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। রিপোর্টে বলা হয়, গোপালপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীন গত জুনে যোগদানের পর অফিসে কিছু মনগড়া আইন চালু করেন। নোটিশ টানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের দুপুর ৩টার আগে অফিসে আসতে বারণ করেন।
সরকারঘোষিত প্রসূতিকালীন ছুটির নিয়ম উপেক্ষা করে মনগড়া আইন চালু করেন; যা নিয়মবহির্ভূত এবং শৃঙ্খলাবিরোধী। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলী আহসান জানান, প্রসূতিকালীন ছুটি নিয়ে হয়রানির শিকার মহিলা শিক্ষকরা তদন্ত কমিটির নিকট লিখিত সাক্ষ্য দেন। ছুটির আবেদন পেন্ডিং রেখে প্রসূতি ও নবজাতককে অফিসে যেতে বাধ্য করেন। তিন জন উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার ও লিখিত সাক্ষ্যে মহিলা শিক্ষকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের তথ্য দেন। তদন্তের মুখে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বোর্ড থেকে বেআইনি নোটিসটি সরিয়ে ফেলেন। তিনি গত বুধবার তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট জমা দেন বলে জানান।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল আজিজ জানান, বিভাগীয় তদন্তের লিখিত সাক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীন প্রসূতিকালীন ছুটি নিয়ে মহিলা শিক্ষকদের হয়রানি এবং মানসিক নির্যাতন করেছেন। এসব কাজ প্রাথমিক শিক্ষার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। সরকারী কর্মচারী শৃঙ্খলাবিধিও তিনি ভঙ্গ করেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক এবং জেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মো. আতাউল গনি জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীন মহিলা শিক্ষকদের সঙ্গে যে হীন ও নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন তা কোনো সভ্য মানুষ মেনে নিতে পারেন না। বিভাগীয় তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলায় তাকে শুধু বদলি নয়, বড় ধরনের শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকে ‘গোপালপুরে প্রসূতিকালীন ছুটি নিয়ে হয়রানি’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়।