শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

৩১ শয্যার জনবলে চলছে ৫০ শয্যার কার্যক্রম

আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:১০

স্থাপনের প্রায় ৫০ বছর পর ২০১৮ সালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাড়েনি স্বাস্হ্যকর্মীর সংখ্যা, হাসপাতালের বাজেট। বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। ফলে জনবল সংকট থাকায় ভর্তি ও বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে প্রায় ৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু করা হয়। বর্তমানে ৩১ শয্যার আলোকেও লোকবলের সংকট রয়েছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালের জন্য যেখানে ২২ জন ডাক্তারের প্রয়োজন, সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র ১১ জন। কনসালট্যান্ট চার জনের জায়গায় আছেন এক জন। ফার্মাসিস্ট চার জন থাকার কথা থাকলেও নেই এক জনও। পরিসংখ্যানবিদ, স্টোরকিপার, হেডক্লার্ক, ইসিজি মেশিনের টেকনিয়ান পদ রয়েছে শূন্য। এছাড়া সহকারী নার্স ও সিনিয়র নার্সের সংকট রয়েছে। ফলে হাসপাতালে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, একমাত্র এনেসথেসিয়া কনসালট্যান্ট থাকলেও জনবলের অভাবে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করার ফলে ওটির যন্ত্রপাতি বিকল হচ্ছে। টেকনিশিয়ান সংকটের কারণে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বাক্সবন্দি রয়েছে। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগী। বিশেষ করে হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট পদটি খালি থাকার কারণে সেবা গ্রহীতাদের নিয়মিত বিপাকে পড়তে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক, গাইনি ও সার্জারি কনসালট্যান্ট পেলে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) চালু করা সম্ভব হবে। অপারেশন থিয়েটার চালু করলে হাসপাতালের মধ্যে সিজার বা ছোটখাটো অপারেশন করা সম্ভব হতো।

মোবাশ্বির মিয়া নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্ত্রীর ডেলিভারির সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার ও নার্সরা সঠিক পরামর্শ দিতে পারেননি। পরে তারা রোগীকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন। সেবা নিতে আসা ইকবাল হোসেন বলেন, চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান সংকটের কারণে বেশির ভাগ রোগীকে তারা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। আমরা এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা পাই।

জনবল সংকটের কথা নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ৫০ শয্যায় হাসপাতাল উন্নতি করা হলেও এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় জনবল পাইনি। চাহিদা মতো জনবলের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জনবল বৃদ্ধি করা হলে আরো ভালো সেবা দেওয়া সম্ভব। সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, দু-এক মাসের মধ্যে টেকনিশিয়ান নিয়োগ করা হবে। ৪২তম বিসিএসের নিয়োগ হওয়ার পরে ডাক্তার নিয়োগের কথা রয়েছে। বিসিএসের নিয়োগ হলেই ডাক্তার নিয়োগ করা হবে। কনসালট্যান্ট নিয়োগ করার জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে বলে আসছি। আশা করছি দ্রুত সময়ে জনবল সংকটের বিষয়টি সমাধান হবে।

ইত্তেফাক/এএইচপি