রাতে মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠানে অতিথির মঞ্চে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজারের ঈদগাঁও জালালাবাদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদের নেতৃত্বে রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলমের ওপর এ সন্ত্রাসী হামলা হয়।
এ ঘটনায় সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঈদগাঁও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন লাঞ্চিত নুরুল আলম।
চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলার বিচারের দাবিতে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির হল রুমে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন নুরুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি দাবি করে নুরুল আলম বলেন, আমি গেল কয়েক বছর ধরে জালালাবাদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার জনপ্রিয়তা বাড়ায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মনোনয়ন হারানোর ভয়ে উন্মাদের মতো আচরণ করছেন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত্রিকালীন মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টে বিশেষ অতিথি হয়ে যাই আমি। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন চেয়ারম্যান রাশেদ। অনুষ্ঠানে আমাকে (নুরুল আলমকে) মঞ্চে দেখেই চেয়ারম্যান রাশেদ কটাক্ষ করেন। প্রতিবাদ করায় নিজেই আমার উপর চড়াও হন। এসময় তার সন্ত্রাসী বাহিনীও হামলায় যোগ দেয়। অন্য অতিথিরা তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে রক্ষা করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল আলম আরো দাবি করেন, চেয়ারম্যান হওয়ার পর হতে রাশেদের বিভিন্ন অত্যাচারে অথিষ্ঠ জনগণ নতুন নেতৃত্ব চায়। আমি জনগণের সে প্রত্যাশা পুরণ করে এগিয়ে যাচ্ছি। ফলে দিনদিন আমার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমার মনোনয়ন কেউ ঠেকাতে পারবে না। এটি বুঝতে পেরে রাশেদ বিভিন্ন সময় আমাকে কটাক্ষ করে গালিগালাজের পাশাপাশি হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। একবার এসপিকে মৌখিক অভিযোগও দিয়েছিলাম৷ এসপি চেয়ারম্যান রাশেদকে কল করলে ক্ষমা চান। কিন্তু পূর্বের ধারাবাহিকতায় ১৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ফরাজি পাড়া এলাকায় আমার ওপর হামলা চালায়।
নুরুল আলমের অভিযোগ, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ইমরুল হাসান রাশেদ ধরাকে সরা জ্ঞান করে এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেছে। তার ভাই, আত্মীয় স্বজন এবং এলাকার চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন অপরাধ চক্র। ফসলি জমির মাটি বিক্রি, পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, খাল থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন, সরকারি বনজ সম্পদ ধ্বংস করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। একই সাথে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও দাবি করেছেন, সরকারি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে গেলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এতে সরকারের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ন হচ্ছে তেমনি দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগ। আমি একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত কাজ করে যাচ্ছি। সেটিই সহ্য করতে পারছে না রাশেদ। তাই আমাকে নৌকার মনোনয়ন চাওয়া থেকে বঞ্চিত রাখতে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে।
নুরুল আলম বলেন, ‘ফরাজি পাড়ায় ক্রীড়াপ্রেমিক যুবকদের আয়োজনে রাত্রিকালীন মিনি ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলায় আমি আমন্ত্রীত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। খেলা শুরুর পূর্বেই আমার ওপর হামলা চালায় রাশেদ। বর্তমানে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের হুমকিতে আমি পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদকে মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হয়। রিং হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
ঈদগাঁও থানার ওসি মো. আবদুল হালিম বলেন, চেয়ারম্যান রাশেদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারিও সরকারি দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা। এটা মানসিক দ্বন্দ্ব বলা চলে। এরপরও অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।