রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনার পর দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকৃত ঘটনা তদন্তে মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আবু মারুফ হোসেন জানান, পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মেনহাজুল আলম ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) মাহব-উল-আলম। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে এএসআই নাদীরা আক্তার ও কনস্টেবল আফরোজা বেগমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ওই তরুণীর প্রেমিক আকাশ ওরফে মিথুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হোসেন আলী গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রুহির বাবা সেকেন্দার আলী মিথুনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেন। পরে মেয়েটির মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যাচাই করে মিথুনকে শনাক্ত করা হয়। মিথুন নিজেকে আকাশ পরিচয় দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে প্রেম করতো। সোমবার রাতে তাকে গঙ্গাচড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) হোসেন আলী জানান, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ফ্যানে ফাঁস দিয়ে ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছে। দুপুরে তার লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এবিষয়ে একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতার মিথুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ড এলাকার সেকেন্দার আলীর মেয়ে রুহি আক্তারের সঙ্গে রংপুরের আকাশ নামে এক যুবকের মোবাইলফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে প্রেমিক তাকে শনিবার রংপুরে আসতে বলে। রুহি আক্তার ফোন পেয়ে ঝিনাইদহ থেকে রংপুরে আসেন। রংপুর নগরীর সাহেবগঞ্জ এলাকায় পৌঁছে আকাশের মোবাইলফোনে কল দিয়েও যোগাযোগ করতে পারেনি। পরে রুহি ওই এলাকায় ঘুরাফেরা করতে থাকলে শনিবার রাতে এলাকাবাসী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরে হারাগাছ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রুহিকে উদ্ধার করে কোতয়ালী থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠায়। সেখানে অবস্থানের দ্বিতীয় দিন রবিবার রাতে সিলিংয়ে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন রুহি। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) হোসেন আলী গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।