বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস পরিচয়ে প্রতারণা, গ্রেফতার ‘বহুরূপী’ চন্দ্রশেখর

আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৩৬

নাম তার চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি (৪২)। কিন্তু পরিচয় দিতেন শেখর নামে। এই শেখর নাম ব্যবহার করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস, সেনাবাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে শতাধিক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। 

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) তেজগাঁও থানাধীন নাজনীনবাগ এলাকা থেকে চন্দ্রশেখর মিস্ত্রিকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। 

গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে চাকরি প্রার্থীর সিভি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির বিজ্ঞপ্তি, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের বদলির আবেদন, সরকারি স্কুল-কলেজের ভর্তির আবেদন, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম, মোবাইল নম্বর, একাধিক সিল, ৬টি মোবাইল ফোন, ৪টি ডেবিট কার্ড ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক জব্দ করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শ্যামলীতে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, গ্রেফতার চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ, বদলি, স্কুল কলেজে ভর্তি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রেরণ, গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ পাশ ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তার আসল নাম চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি হলেও সে শেখর নামে পরিচয় দিতেন।

ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, গত ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার পরিচয়ে চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করে একজন ছাত্রকে ভর্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। এ অভিযোগের পরিপে্রক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

এছাড়াও গ্রেফতারকৃত চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস, মন্ত্রীপরিষদ সচিবের পিএস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয়ে সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ, বদলি, স্কুল কলেজে ভর্তি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রেরণ, গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ পাশ ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। 

প্রতারক চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি যখন মোবাইল ফোনে নিজেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতো, আগে থেকে তার কণ্ঠ নকল করার প্র্যাকটিস করে অবিকলভাবে তার মতো করে কথা বলতো। তার মোবাইল ফোনের কললিস্ট পর্যালোচনা করে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।

চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে তেজগাঁও থানায় গ্রেফতার হয়েছিল। 

এক প্রশ্নের জবাবে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তার সঙ্গে এই প্রতারণার।কাজে আর কারা কারা জড়িত তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। এখন পর্যন্ত চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি শতাধিক লোকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে জানা গেছে।

 

ইত্তেফাক/এসজেড