শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ইউক্রেন যুদ্ধে শঙ্কায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা 

আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৫৬

গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই দিনেই বিশ্ব বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ১০২. ৩২ ডলারে উঠে। এ নিয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের শঙ্কা, ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে তাদের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কার্যক্রমে প্রভাব পড়তে পারে। কেননা উভয় দেশই কৃষিপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী।

বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর তাদের ব্যবসা করার ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে।

এছাড়াও, গত দুই বছর ধরে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন প্রভাবিত হয়েছে। আর এই যুদ্ধ এমন পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। 

ইউরোপে যুদ্ধের কারণে আকাশ ও সমুদ্র উভয় পথে পণ্যের চালানেও প্রভাব পড়বে। এছাড়া এই সংঘাতের কারণে কিছু মৌলিক পণ্য, শিল্প কাঁচামাল এবং শিল্প যন্ত্রপাতির দামকেও খারাপভাবে প্রভাবিত করতে পারে। কেননা রাশিয়া ও ইউক্রন দুই দেশই এসব পণ্যগুলোর প্রধান উৎস। 

বাংলাদেশের কিছু ব্যাংকার বলেছেন, এই পরিস্থিতি ব্যাংকিং খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ প্রধান আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অংশীদাররা ইতোমধ্যে কিছু ব্যাংককে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন পরিচালনা করতে নিষিদ্ধ করেছে। 

বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের। অন্যদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিমুখী বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, রাশিয়া ও ইউক্রেন বাংলাদেশের গম, তুলা এবং শিল্প উপকরণ ও যন্ত্রপাতির প্রধান উৎস।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমাদের ব্যবসায় বিশেষ করে পোশাক রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে রপ্তানিতে প্রভাবের মাত্রা নির্ভর করে যুদ্ধ কতদিন চলবে তার ওপর।

একই কথা বলেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএম) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। 

তিনি বাংলাদেশের এক গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে, আমরা ইউক্রেন বাজার হারাবো কারণ এটি একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ব্যবসা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। 

আমদানিকারকরা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী গম সরবরাহের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে।

তবে বাংলাদেশের স্থানীয় আমদানিকারকরা বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে চালানের সংখ্যা হ্রাস করেছেন। পরিবহনের সুবিধার কারণে এখন ভারত থেকে কেনাকাটা বাড়িয়েছেন। 

চট্টগ্রামভিত্তিক বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল বাশার চৌধুরী বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব সারা বিশ্বে পড়বে। কারণ উভয় দেশই খাদ্যশস্য ও অন্যান্য পণ্যের প্রধান সরবরাহকারী। 


 

 

ইত্তেফাক/এসআর