মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন

আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ০২:১৩

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এক ও অবিচ্ছেদ্য বিষয়।

ভারত: বাংলাদেশ হাই কমিশন নয়াদিল্লিতে আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন করেছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয়
পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। দূতাবাসের মান্যবর হাই কমিশনার মোহাম্মদ ইমরান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর দূতাবাসের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দূতাবাসের মান্যবর হাই কমিশনারের নেতৃত্বে এ সময়ে
দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আলোচনায় হাই কমিশনার মোহাম্মদ ইমরান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি ছিলো শোষণ, নির্যাতন, অত্যাচার এবং বৈষম্যের
বিরুদ্ধে মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণে তিনি শুধুমাত্র বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রতিরোধ সংগ্রামের নির্দেশনাই দেননি বরং এটি ছিলো বিশ্ব কূটনীতিতে এক ঐতিহাসিক ভাষণ।

বাংলাদেশ হাই কমিশন নয়াদিল্লিতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন।

তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বে বিশ্বমানবতার পক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ছিলো সবচেয়ে অনুপ্রেরণামূলক ভাষণ। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে দিবসটি উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। এর আগে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

চীন: চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে সোমবার যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, তাঁর পরিবারের সাহাদাত বরণকারী সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং দেশের সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ, আলোচনা সভা এবং ৭ মার্চ এর ভাষণ প্রদর্শন।

চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে ৭ মার্চ একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বজ্রকন্ঠে যে কালজয়ী ভাষণ দিয়েছিলেন, তার মধ্যেই নিহিত ছিল বাঙালির মুক্তির ডাক। ঐতিহাসিক সেই ভাষণের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাঙালি জাতির স্বাধীনতা। দীর্ঘ নয়
মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ কেবল আমাদের নয়, বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্যও প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে’।

সিঙ্গাপুর: বাংলাদেশ হাইকমিশন সিঙ্গাপুরে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন করেছে।

সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রমের সূচনা করেন সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার জনাব মো. তৌহিদুল ইসলাম।

বিকেলের বিশেষ অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বাণী পড়ে শোনানো হয়। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের উপরে নির্মিত একটি বিশেষ ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। আলোচনা অংশে বক্তারা বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল সূত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে এর অনন্য সাধারণ বৈশিষ্টসমূহের কথা তুলে ধরেন। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

জাপান: যথাযথ মর্যাদায় বাংলাদেশ দূতাবাস টোকিওতে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করেছে।

 

সোমবার সকালে স্বাস্থ্য বিধি মেনে দূতাবাস প্রাঙ্গণে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। পরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সাথে সাথে রাষ্ট্রদূত কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়াংশে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সদস্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্তবাণী পাঠ করা হয়।

ইত্তেফাক/এমআর