শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘আসামিদের’ সঙ্গে জন্মদিনের কেক কেটে প্রত্যাহার হলেন ওসি

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২২, ১৮:০৪

কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামিদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কেটে খাওয়াটাই কাল হলো ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণির।

গত ২ মার্চ ওসির জন্মদিনে নিজ কার্যালয়ে কেক কেটে পলাতক আসামিদের মুখে তুলে দেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার ঝড় উঠে। এটি নজরে আসার পরই ওসিকে চকরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম।

জন্মদিন উপলক্ষে ওসি আকাশি রঙের সাদা পাঞ্জাবি পড়লেও মামলার পলাতক আসামিরা ছিলেন নানা রঙের পোশাকে। আসামিদের কেক খাইয়ে দেওয়া ছবিগুলো প্রচার হতেই সমালোচনা শুরু হয়।

আদালত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর আহত ও তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় তারেকুলের ছোট ভাই তানজীমুল ইসলাম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরহান মাহমুদ রুবেলকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। কয়েক মাস আগে আদালতে ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।

জানা গেছে, ২ মার্চ বিকেলে হত্যাচেষ্টা মামলার ১ নম্বর আসামি আরহান মাহমুদ রুবেল, ৬ নম্বর আসামি মো. আলিফসহ ছাত্রলীগের ১৪ জন তরুণ কেক নিয়ে ওসির কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর কেক কেটে ওসির জন্মদিন পালন করা হয়। ওসিকে কেক খাইয়ে দেন আসামিরা। ওসি নিজেও তাদের কেক খাইয়ে দেন। কেক খাওয়ানোর স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারণ করা হয়।

ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ৫৯ মিনিটে আরহান মাহমুদ রুবেল নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ওসিকে ট্যাগ দিয়ে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি (আরহান) লেখেন, ছোট্ট আয়োজনে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে (ওসি ওসমান)। আজকের এই শুভ জন্মদিনে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইল প্রিয় ভাই। অন্য আসামি মো. আলিফও তার ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেন।

আরহান মাহমুদের করা ফেসবুক পোস্টের ছবিতে দেখা গেছে, ওসি ওসমান গণি মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তার বাঁয়ে কালো কোট পরা আরহান, আলিফসহ কয়েকজন ওসির মুখে জন্মদিনের কেক তুলে দিচ্ছেন। ওসিও আরহানকে কেক খাইয়ে দেন। এরপর আরহানের সঙ্গে যাওয়া তরুণদের নিয়ে ওসি ফটোসেশন করেন।
পলাতক আসামিদের নিয়ে জন্মদিন পালনের বিষয়ে ওসি ওসমান গণির বক্তব্য জানতে তার সরকারি মুঠোফোন নম্বরে কল করা হয়। কিন্তু ফোন ধরেন থানার ওসি (তদন্ত) মো. জুয়েল ইসলাম। তিনি জানান, ওসি স্যারকে (ওসমান গণিকে) প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ১৭ মার্চ পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ চকরিয়ার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

ইত্তেফাক/ইউবি