দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে সিলেট-ছাতক রেল রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। এই রুটের হাজার হাজার যাত্রী ট্রেনের সেবা থেকে বঞ্চিত। সড়ক পথে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে তারা চলাচল করছেন। ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনে নানা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আর এর মাশুল গুনছেন সাধারণ মানুষ।
রেলওয়ে সূত্র থেকে জানা যায়, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রথম দফায় বিধিনিষেধের কারণে গত ২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়। দুই মাসের বেশি সময় একটানা বন্ধ থাকার পর ঐ বছরের ৩১ মে আবার ট্রেন চালু হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে ২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে একটানা সাত সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ২৪ মে থেকে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপর ২৩ জুন থেকে আবার বন্ধ করে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করে। পরে ২৩ জুলাই থেকে বন্ধ থাকার পর গত ১১ আগস্ট থেকে দেশে সচল হয় ট্রেন চলাচল। কিন্তু সিলেট-ছাতক রেলপথে চলাচলকারী মেইল ট্রেনটি প্রথম দফা ২৫ মার্চ থেকে আজো তা বন্ধ রয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রেলওয়ের আখাউড়া সেকশনের অধীন সিলেট-ছাতক রেলপথ প্রায় ৩৫ কিলোমিটারের। প্রতিদিন সিলেট থেকে সকালে যে ট্রেন ছাতক যেত, সেটি আবার বিকালে সিলেটে ফিরে আসত। এতে পণ্য পরিবহনেরও বগি ছিল। এই ট্রেনটির চলাচল টানা আড়াই বছর বন্ধ থাকায় সিলেট-ছাতক রেলপথের অবস্থা এখন নাজুক। অনেক স্থানের নাট-বল্টু নেই, স্লিপার ক্ষয়ে যাচ্ছে। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় কম খরচে পণ্য পরিবহন করতে না পারায় বাংলাবাজার এলাকায় গড়ে উঠা কাঁচামালের হাট বন্ধ হয়ে গেছে। এই অঞ্চলের সব কাঁচামাল সকালের ট্রেনে সিলেট নিয়ে যাওয়া হতো।
সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. নুরুল ইসলাম জানান, করোনার কারণে সিলেট-ছাতক লাইন বন্ধ হয়ে যায়। তবে রেল চলাচল আবার শুরু হবে। তবে কবে নাগাদ চালু হবে, এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি তিনি। সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ইত্তেফাককে বলেন, রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, শিগগিরই এই রুটে ট্রেন চলাচল আবার চালু হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ছাতক ব্রিটিশ আমল থেকে একটি শিল্প শহর। ১৯৫৪ সালে স্হাপিত হয় সিলেট-ছাতক রেল লাইন। প্রাচীন এই শহরের রেল স্টেশনটি ছিল অন্যতম আকর্ষণ। এখানে রয়েছে রেলের স্লিপার কারখানা ও ছাতক-ভোলাগঞ্জ রজ্জুপথ।