শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মহাসড়ক বন্ধক রেখে ১৫ কোটি টাকার ঋণ!

আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০৮:২৯

সরকারি জমি বন্ধক রেখে দুই দফায় ব্যাংক থেকে নেওয়া হয় ১৫ কোটি টাকার ঋণ। সেটি ধরা পড়লে দলিল সংশোধন করে বন্ধক জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে আবার ব্যাংকে জমা দেন ঋণগ্রহীতা। সংশোধিত দলিলের জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গিয়ে ব্যাংক জানতে পারে সেটিও ভুয়া। একটি হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেফতার করতে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব জানায়, সংশোধিত যে দলিলটি জমা দেওয়া হয় সেটির প্রকৃত মালিক জামির আলী। ২৭ শতাংশ ওই জমি দখলে নিতে একাধিকবার তার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টা চলে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অভিযোগ করলেও তারা ব্যবস্হা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

তথ্য-প্রমানের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর একটি দল গত রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে অভিযুক্ত প্রতারক গোলাম ফারুক (৫০) ও তার সহযোগী ফিরোজ আল মামুন ওরফে ফিরোজকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বাড্ডা থানার মেরুল বাড্ডা এলাকায় জাল দলিল সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একটি হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। ভিকটিমকে নিজ জমি থেকে জোরপূর্বক উত্খাত করার উদ্দেশে প্রতারক গোলাম ফারুক ও তার প্রধান সহযোগী ফিরোজ আল মামুনসহ অন্যরা গত ২৬ মার্চ ও ৬ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশে হামলা করে।

ওই ঘটনায় ভিকটিম আদালতে একটি নালিশী আবেদন করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে বাড্ডা থানাকে এটি এফআইআর হিসেবে গ্রহন করার আদেশ দেন। এ বিষয়ে বাড্ডা থানায় একটি মামলা হয়। র্যাব ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গত রাতে প্রতারনার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত্কারী এবং হত্যা চেষ্টা মামলার প্রধান আসামি গোলাম ফারুক ও ফিরোজ আল মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বাড্ডায় হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, পÌতারণা, জালিয়াতি ও ভয়ভীতি পরিদর্শনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে র্যাবকে তথ্য দিয়েছে। মহাসড়কের জমি কেনা-বেচা করে প্রতারনামূলকভাবে ব্যাংকে বন্ধক রেখে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর তথ্যও দিয়েছে তারা।

মহাসড়কের জমি নিজের দেখিয়ে ব্যাংক লোন: জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল ও মহাসড়কের জমিকে নিজের দেখিয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বন্ধক দেন। এজন্য তিনি আরও ১৫ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নেন। কিন্তু ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৩ সালে ব্যাংক অর্থ আদায়ের উদ্দেশে বন্ধকি জমি নিলামে বিক্রি করার নোটিশ জারি করলে ব্যাংক সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পায় ওই জমিটি সরকারি সম্পত্তি। পরে তিনি দলিল সংশোধন করে আগের বন্ধক জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে মামলার বাদীর ও ভুক্তভোগী জামির আলীর জমির দাগ নম্বর উল্লেখ করেন। তখন ব্যাংক সেই জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্হাপন করতে গিয়ে জানতে পারে সেটিও ভুয়া।

ইত্তেফাক/এমআর