শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৫৩

ইত্তেফাক অনলাইনে গত ১৪ এপ্রিল 'স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় না করেই টাকা উত্তোলন' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। ওই সংবাদটির বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিবহন অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার।

প্রতিবাদলিপিতে তিনি দাবি করেন, প্রকাশিত সংবাদে তাকে জড়িয়ে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সসমূহের ৮জন গাড়িচালকের স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট ২৩ হাজার ১২৫ টাকা আগাম নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সাড়ে ৪ হাজার টাকার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ক্রয় করা হয়েছে। করোনার প্রাদূর্ভাব কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে অন্য আইটেমগুলো ক্রয় করা হয়নি, এবং এখন পর্যন্ত বিলও প্রেরণ করা হয়নি। অবশিষ্ট টাকা পরিবহন অফিসে সংশ্লিষ্ট অফিসারের নিকট জমা রয়েছে। অতএব ভূয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে টাকা উত্তোলনের তোড়জোড় শুরু করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহ প্রাদূর্ভাবের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িসমূহ মশামুক্ত রাখার জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ৭৬ হাজার ৮৬০ টাকায় ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ২৫২টি অ্যারোসল ইনসেক্ট স্প্রে ক্রয় করা হয়েছে। করোনার প্রাদূর্ভাব শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ২ বছর বন্ধ থাকায় এবং করোনা মোকাবেলায় অন্যান্য স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করায় অ্যারোসল ইনসেক্ট স্প্রে সরবরাহ বন্ধ ছিল, যা চালু করা হয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সব স্প্রে একসাথে সরবরাহ না নিয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে ধাপে ধাপে আনা হচ্ছে এবং গাড়িচালকদের মধ্যে বণ্টন করা হচ্ছে। বর্তমানে পরিবহন স্টোরে ১৮৮টি স্প্রে মজুত আছে।

তিনি বলেন, ভূয়া ভাউচার দেখিয়ে ৭৬ হাজার ৮৬০ টাকা উত্তোলন করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন। দেশের শীর্ষ পর্যায়ের সংবাদপত্র হিসেবে দৈনিক ইত্তেফাকে এ ধরনের মনগড়া ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন অপ্রত্যাশিতও বটে।


প্রতিবেদকের বক্তব্য: প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট গাড়িচালকদের সঙ্গে কথা বলে ও পরিবহন অফিসের কর্মকর্তাদের থেকে প্রাপ্ত নথিপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার গাড়িচালকদের জন্য স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় করা বাবদ টাকা উত্তোলন করেছেন। অথচ তিনি হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাদে অন্য কোনো সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয় করেননি বলে প্রতিবাদলিপিতে জানিয়েছেন। তবে করোনার প্রাদুর্ভাবে গাড়ি চালকদের মাস্ক, পিপিই ও হ্যান্ড গ্লাভস সরবরাহ না করা এবং দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও সেই টাকা অন্যখাতে সমন্বয় না করায়  অধ্যাপক আলী আজমের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এছাড়া করোনার দোহাই দিয়ে অ্যারোসল ইনসেক্ট স্প্রে সরবরাহ বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছিলেন অধ্যাপক আলী আজম। তবে প্রকৃত ঘটনা হলো,  অ্যারোসল ক্রয় বাবদ টাকা উত্তোলনের বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তিনি তড়িঘড়ি করে একসঙ্গে অনেকগুলো অ্যারোসল ক্রয় করে সমন্বয়ের চেষ্টা করেছেন। অনিয়মের সকল নথিপত্র এবং সংশ্লিষ্ট গাড়িচালক ও অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার রেকর্ডিং ইত্তেফাকের এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

ইত্তেফাক/এসটিএম