বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান সাবেক এক আফগান জেনারেল

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২২, ০৬:১৩

আফগানিস্তানের পূর্ববর্তী প্রশাসনের অধীনে থাকা সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ এক কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি এবং সাবেক অনেক সেনা ও রাজনীতিকরা তালেবানের বিরুদ্ধে নতুন এক যুদ্ধ শুরুর প্রস্ত্ততি নিচ্ছেন। লেফটেনেন্ট জেনারেল সামি সাদাতের মতে, তালেবানের আট মাসের শাসনে অনেক আফগানই বুঝতে পেরেছে সামরিক অভিযানই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ।

ঈদের পর আগামী মাসেই এই অভিযান শুরু হতে পারে, সে সময়ই তিনি আফগানিস্তানে ফেরারও পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন সাদাত। গত বছরের আগস্টে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে। মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই তারা পুরো দেশ নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয়। কাছাকাছি সময়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটও তাদের ২০ বছরের সামরিক অভিযান শেষ করে দেশটি ছেড়ে যায়। নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে প্রথমবার কথা বলা লেফটেনেন্ট জেনারেল সাদাত বলেছেন, আফগানিস্তানকে তালেবানমুক্ত করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে ‘আমাদের শক্তির মধ্যে যা যা করা দরকার, করব’। ‘যতক্ষণ না আমরা স্বাধীনতা পাই, যতক্ষণ না মতের স্বাধীনতা পাই, আমরা লড়াই চালিয়ে যাব,’ বলেছেন তিনি।

আগের সেনাবাহিনীতে জেনারেলের দায়িত্ব পালন করা সাদাত তালেবানরা যেভাবে নারী ও মেয়েদের অধিকারের ওপর কঠোর বিধিনিষেধসহ দেশ জুড়ে ফের কট্টর শাসন চাপিয়ে দিচ্ছে সেদিকে নির্দেশ করে বলেন, তাদের কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা বাতিল করে নতুন অধ্যায় শুরুর এখনই সময়। ‘তালেবানের আট মাসের শাসনে আফগানিস্তানে আমরা যা দেখেছি, তা আরো ধর্মীয় বিধিনিষেধ, ভুল উদ্ধৃতি, ভুল ব্যাখ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআনের ভাষ্যের অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়,’ বলেছেন তিনি।

সাদাত প্রথমে তালেবানকে এক বছর সময় দিয়ে তারা বদলায় কিনা তা দেখতে চেয়েছিলেন। ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রতিদিনই আপনাকে জেগে তালেবানদের নতুন কোনো অপকর্ম দেখতে হয়। দেখতে হয় মানুষকে নির্যাতন, খুন, গুম, খাদ্য ঘাটতি, অপুষ্টিতে ভোগা শিশু,’ বলেন তিনি। সাদাত জানান, প্রতিদিন তিনি আফগানিস্তান থেকে শত শত মেসেজ পাচ্ছেন, তাতে এই পরিস্থিতিতে তিনি কী করতে যাচ্ছেন, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ দেখে দেখে ক্লান্ত আফগানরা নতুন কোনো যুদ্ধে ধকল নিতে চাইবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বছরের পর বছর যুদ্ধ, উদ্বাস্তু হওয়া, তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে টিকে থাকার লড়াই তাদেরকে এমনিতেই ক্লান্ত করে রেখেছে।

ইত্তেফাক/এএইচপি