সারিয়াকান্দিতে ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে শাহেদা বেগম নামে স্থানীয় এক নারীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, গত দেড় বছর আগে উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামের টুকু তরফদারের স্ত্রী শাহেদা বেগম বিভিন্ন সময়ে বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে গ্রামের একাধিক গরিব অসহায় নারীর নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেন।
ভাতার কার্ড না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা তার বাড়িতে টাকা ফেরত চাইতে গেলে শাহেদা তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। পরে তিনি উলটো গত ১১ এপ্রিল বগুড়া জজ কোর্টে মুচলেকা চেয়ে ভুক্তভোগী ১৪ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। এবিষয়ে বিচার চেয়ে ভুক্তভোগীরা গত বছরের ১৪ অক্টোবর কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদে এবং গতকাল সোমবার (৯ মে) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সারিয়াকান্দি অফিসের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে বলে পরিচয় দিয়ে শাহেদা বেগম আমার নিকট থেকে ৬ জনের ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। পরিষদের বিচারে তিনি হাজির হন না। তার বাড়িতে টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় তিনি উলটো আমাদের নামে মামলা দিয়েছেন। প্রশাসনের কাছে আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’
ভুক্তভোগী নবিতন বেগম বলেন, ‘শাহেদা আমার কাছ থেকে ১২ হাজার ৬০০ টাকা, ফুলেরার নিকট থেকে ৯ হাজার ৫০০ টাকা, সুরুতজানের নিকট থেকে ৪ হাজার টাকাসহ এলাকার একাধিক নারীর নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভাতার কার্ড করে দেননি, টাকাও ফেরত দেননি। উলটো আমাদের নামে তিনি কোর্টে মামলা দিয়েছেন। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’
আরকেজন ভুক্তভোগী ফুলেরা বেগম। তিনি বলেন, ‘ভাতার কার্ড পাওয়ার জন্য মানুষের কাছ থাকে সুদের উপর ট্যাকা নিয়ে শাহেদাকে দিছি। এডে নিয়েই হামার সংসারত একন অশান্তি।’
এবিষয়ে অভিযুক্ত শাহেদা বেগম বলেন, ‘আমি কারো কাছে থেকে টাকা নেইনি। তারা অযথাই আমার বাড়িতে এসে আমার গোয়ালের গরু নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন, আবার ইট নিয়ে চলে যান। তাদের নামে আমি কোর্টে মামলা দিয়েছি।’
কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমি নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে মাত্র শপথ নিয়েছি। অভিযোগটি পুরাতন চেয়ারম্যানের সময়ের। বিষয়টি পুনরায় আমলে নিয়ে আসা হবে।’
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘যেহেতু অভিযুক্ত নারী কোনো সরকারি চাকরিভুক্ত নয়। তাই তাকে ধরা খুবই কঠিন। তবে অভিযোগটির সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’