ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে বৃষ্টিতে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। উপজেলার কয়েকটি বিল ও মাঠের হাজার হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যেতে বসেছে। এদিকে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার শ্রমিকের সংকটও দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকের ধানের জমিতে কোথাও হাটু জল আবার কোথাও কোমর পানি হয়ে পড়েছে। কারো কারো জমির ধান হালকা বাতাস ও বৃষ্টিতে নুইয়ে পড়েছে। অন্য জমির ধানের শীষ কেবল পানির উপরে রয়েছে। এ যেন মাথা উঁচু করে বাঁচার চেষ্টা করছে।
কৃষকরা জানান, পাকা ও আধা পাকা এমন ধান নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন তারা। নতুন করে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। একজন শ্রমিকের মজুরি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এলাকা ও জমির ধরনে তা কোথাও আরও বেশি। বাজারে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। সেখানে একজন শ্রমিকের মজুরি ৮০০ টাকা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা।
এদিকে, উপজেলার বিষ্ণুবাড়িয়া মাঠ ও ঘুঘুদহ বিলে দেখা যায়, ধানের জমিতে হাটু ও কোমর পানিতে অনেকেই শ্রমিক দিয়ে ধান কাটছেন। পানিতে ধান কাটা কষ্টকর হচ্ছে বলে জানান শ্রমিকরা।
উপজেলার আত্রাইশুকা গ্রামের কৃষক বাবলু ও চাঁন মিয়া বলেন, ‘জমিতে বৃষ্টির পানি বেশি হওয়ায় ধান কাটা বন্ধ রেখেছি। একমণ ধানের দামের সমান একজন শ্রমিকের মজুরি হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’
একই গ্রামের বাবলু জানান, শ্রমিকের তুলনায় ধানের পরিমাণ বেশি হওয়ায় তিনি নিজেই ধান কাটা শুরু করেছেন।
উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের কৃষক মধু বলেন, ‘ঘুঘুদহ বিলে বোরো ধান রোপণ করেছিলাম। অধিকাংশ ধানের জমিতে হাটু পানি। কিছু জমির ধান পানির নিচে রয়েছে।’
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জীত কুমার বলেন, ‘উপজেলায় ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাকি ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। এ ছাড়াও, মাঠের পানি সরানোর জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’