কক্সবাজার জেলার টেকনাফের শিশু মুহাম্মদ আলী উল্লাহ আলো হত্যার ১১ বছরের মাথায় রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। মামলায় অভিযুক্ত ৬ জনের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। অপর ২ জন অভিযুক্তকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১১ মে) বিকাল সোয়া ৫টার দিকে আদালতে এ রায় দেন জেলা ও দায়রা জজ। দীর্ঘ পৌনে ১ ঘণ্টা রায় পড়ে শোনানোর পর ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করে রায় দেন তিনি।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার কোদ্দ নারায়নপুরের মৃত আফতাব আলীর ছেলে মো. সুমন আলী (২৬), ঠাকুরগাঁও জেলার নিশ্চিন্তপুরের মৃত শামছুল হকের ছেলে ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান (২৯), কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুরের মৃত আসলাম মিয়ার ছেলে মো. ইয়াকুব (৩৪), টেকনাফের গোদার বিল গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে মো. ইসহাক প্রকাশ কালু (৩১), টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়ার মৃত নবী হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলাম (২৮)। মিয়ানমারের মংডু থানার ধনচি পাড়ার মৃত আবদুর রহিমের ছেলে রোহিঙ্গা ছৈয়দুল আমিন প্রকাশ লম্বাইয়া (৪৭)। তাদের মধ্যে ইয়াছিন, ইয়াকুব, ইছহাক কালু জেলহাজতে রয়েছেন। ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বাকি আসামি সুমন, নজরুল, ছৈয়দুল আমিন লম্বাইয়া পলাতক রয়েছেন।
খালাস পাওয়া দুই আসামি হলেন- টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ মাঝের পাড়ার মৃত মৌলভী আবদুল জলিলের ছেলে মহিবুল্লাহ (৪৫), টেকনাফ পৌরসভার লেঙ্গুরবিলের জাফর আহমদের ছেলে মো. দিদার মিয়া (৩৫)। তাদের মাঝে মুহিবুল্লাহ জামিন নিয়ে পলাতক এবং দিদার মিয়া কারাগারে রয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায় ঘোষণাকালে কারাবন্দি আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসির রায় শুনে দণ্ডপ্রাপ্তরা মুখ কালো করলেও কান্নাকাটি করেননি। আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদী মো. আবদুল্লাহসহ তার স্বজনরা।
তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী আবদুল্লাহ বলেন, ‘যারা ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তারা খালাস পেয়েছে। আর ভাড়াটিয়াদের ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ে আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। উচ্চ আদালতে আমি আপিল করবো।’
রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌশুলী পিপি ফরিদুল আলম বলেন, ‘এ রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অপরাধ যেই করুক শাস্তি তাকে পেতেই হবে।’
আসামি পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী সেলিম উদ্দীন রাজু জানান, তিনি ও তার মক্কেল এ রায়ে অসন্তুষ্ট, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন।