রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের আঙিনা জুড়ে খেলাধুলা অঙ্গনের মানুষদের ভিড়। একে একে সবাই আসছেন আর জমায়েত হচ্ছেন। অনেক দিন জমে থাকা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। তাই যারা পুরস্কার গ্রহণ করবেন তারা তো এসেছেনই, আরও এসেছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকদের অনেকেই।
পুরস্কারপ্রাপ্ত অনেকের গায়ে নতুন জামা-কাপড়। যেন ঈদের সকাল। খেলাধুলা জীবনের প্রাপ্তি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। এক জনের সঙ্গে আরেক জনের অনেক দিন পর দেখা হচ্ছে। করোনার কারণে অনেকের দেখাও হচ্ছিল না। করোনা কমে এলেও দেখা হয়েছে কম। গতকাল জাতীয় পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠান সবাইকে কিছুটা সময়ের জন্য একটা মঞ্চে তুলে এনেছিল।
সাবেক দ্রুততম মানবী সুলতানা পারভিন লাভলী, সাবেক সাঁতারু মাহফুজা তানিয়া, টেবিল টেনিসের মুনিরা মোরশেদ খান হেলেন, সাবেক ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি, জুয়েল রানা, বরুণ বিকাশ দেওয়ান, আরিফ খান জয়, কাজী আনোয়ার হোসেন, আবু ইউসুফ, সবার মুখে চওড়া হাসি। সবার কণ্ঠে কথা একটাই- পুরস্কার নয়, দেশের জন্য খেলার চেষ্টা করেছেন। দেশকে কিছু দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কে কতটুকু পেরেছি বা পারিনি তার হিসাব না-ই বা করি।
দুই ভরি সোনার পদক গলায় নিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্তরা যেন প্রশান্তি পাচ্ছেন। অনুষ্ঠানস্হলে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছিলেন। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাচুর্য়ালি অনুষ্ঠানে উপস্হিত ছিলেন। প্রথম আট জনকে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন তিনি। অন্যদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
সেই ২০১৩ সাল থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়নি। জমে ছিল পুরস্কার। এবার দেওয়া হলো ২০২০ সাল পর্যন্ত। গতকাল ৮৫ জনকে পুরস্কৃত করা হলো। সবাই চায় বছরের পুরস্কার যেন বছরেই দেওয়া হয়। কিন্তু মুখে না বললেও সবার মনের কথা বলে দিয়েছেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুরস্কার সময়মতো পেলে ভালো লাগে। ভালো লাগে সেটা সবাইকে দেখাতে। আর সঠিক সময়ে পুরস্কার হাতে পাওয়ার আনন্দটাও ভিন্ন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেন যেন প্রতি বছর পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। তার এই কথায় সবাই খুশি হয়েছেন। হাততালিতে মিলনায়তন সরব হয়ে উঠেছিল।
দুই ভাই পুরস্কার পেলেন একসঙ্গে। বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রথম সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর হোসেন পল্টু খেলোয়াড় ও ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে এবং ভাই এনায়েত হোসেন সিরাজ ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছেন। সালাম মুর্শেদী ও তার ভাই কালাম পুস্কার পেয়েছেন আগেই। কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপলের ভাই কাজী মাহতাব উদ্দিন এবার পুরস্কার পেলেন। হকির তারকা এহতেশাম সুলতানের ভাই ইমতিয়াজ সুলতান জনি পুরস্কার পেলেন এবার। ছোট বোন টিটির তারকা জোবেরা রহমান লিনু ১৯৯৯ সালে জাতীয় পুরস্কার পান। তার বড় বোন টিটির আরেক সাবেক খেলোয়াড় মুনিরা মোরশেদ খান হেলেন এবার পুরস্কার পেলেন।