তেঁতুলিয়ায় পটাশসহ রাসায়নিক সারের সংকট দেখা দিয়েছে বলে ক্ষুদ্র চা-চাষিরা জানিয়েছেন। এই উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের হাটবাজারে সার না পাওয়ার কথা জানানো হয়। অন্যদিকে সাধারণ কৃষকও সারের সংকটে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সারের সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
উপজেলার সদর ইউপির তেলিপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র চা-চাষি হাবিব জানান, বাজারের কোনো দোকানে ঘুরে সার পাইনি। বিশেষত পটাশ সারের খুব সংকট। এই সময় চা-বাগানে সার দিতে না পারলে পাতা হবে না। ফলে আমরা চা- চাষিরা লোকসানে পড়ব।
আজিজনগর মণ্ডল টি-গার্ডেনের মালিক মোখলেসুর রহমান জানান, শারিয়ালজোত ও কানকাটা গ্রামের কয়েক জন কৃষক জানান, গত এক মাস ধরেই পটাশসহ সার না পাওয়ার কারণে চা-বাগান, পাট ও ভুট্টা আবাদে সার দিতে পারছি না। যার কারণে কাঙ্ক্ষিত ফসল আবাদে সমস্যা হচ্ছে।
উপজেলার ভজনপুর এলাকার সার ডিলার রফিকুল ইসলাম জানান, চা-বাগান এবং কৃষি আবাদে যে পরিমাণ সারের প্রয়োজন আমরা তা পাচ্ছি না। ফলে কৃষকও প্রয়োজনীয় সার পাচ্ছেন না। এই জেলায় আরো সারের বরাদ্দ প্রয়োজন।
বাংলাদেশ চা-বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলায় নিবন্ধিত ক্ষুদ্র চা-বাগান রয়েছে ১ হাজার ১৬৮টি। অনিবন্ধিত চা-বাগান রয়েছে ৬ হাজার। ৭ হাজার ২৮৩ একর জমিতে চায়ের আবাদ করা হয়েছে। জেলায় শুধু চা-চাষের জন্য বছরে ৪ হাজার মেট্রিক টন সারের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এই চা-বাগানের বিপরীতে ইউরিয়া ৩০০ মেট্রিক টন, টিএসপি ১০০ মেট্রিক টন ও ডিএপি ২০০ মেট্রিক টনসহ মোট ৬০০ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাই চা-চাষিরা প্রয়োজনীয় সার পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ চা-বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শামীম আল মামুন জানান, আমাদের গবেষণা মতে এই জেলায় চা-চাষের জন্য বছরে ৪ হাজার মেট্রিক টন সারের প্রয়োজন রয়েছে। ক্ষুদ্র চা-চাষিরা আরো বেশি সার ব্যবহার করেন। সেই তুলনায় সার আরো প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাজারে কোনো সারের সংকট নেই। সারের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এ মাসের মধ্যেই ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকরা সার পেয়ে যাবেন।