বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পাবনায় গাছে গাছে ঝুলছে লিচু 

আপডেট : ১৪ মে ২০২২, ১৬:০৭

পাবনায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। গত কয়েক বছরে এখানকার চাষিরা আশানুরূপ ফলন পাননি। এবছর ভালো লাভ হবে বলে মনে করছেন তারা।

লিচুর নগরী খ্যাত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন বাগানে আঁটি জাতের লিচু সংগ্রহ, বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এছাড়া চাটমোহর ও আটঘরিয়া উপজেলায় প্রচুর লিচু আবাদ হয়েছে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে চায়না-২, চায়না-৩ বোম্বাই জাতের লিচু ব্যাপকভাবে পাওয়া যাবে। তখন এ লিচু বাজারে এলে ঈশ্বরদী থেকে সারাদেশে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক সরবরাহ হবে।

এখন উপজেলার মিরকামারি, জয়নগর, জগন্নাথপুর, বকচারপুর, ছলিমপুর, শাহপুর, দিয়ার শাহপুর, আথাইলশিমুলসহ প্রায় ৩০টি গ্রামে শুধু আঁটি জাতের লিচু আর লিচু দেখা যাচ্ছে। লিচু আহরণ, বাছাই এবং প্যাকেট করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া, সদর উপজেলার উগ্রগড়, জোয়ারদহ, হামিদপুরসহ প্রায় ১৫টি গ্রাম এবং চাটমোহর ও আটঘরিয়া উপজেলায় প্রচুর লিচু আবাদ হয়েছে।

গাছ থেকে লিচু পাড়া হচ্ছে।

ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর শিমূলতলায় প্রতিদিন সকালে বসছে বিশাল লিচুর হাট। জয়নগর শিমূলতলা ছাড়াও উপজেলার আওতাপাড়া, বাঁশেরবাদা, জয়নগর বোর্ডঘর, সাহাপুর ও দাশুড়িয়ায় পাইকারি লিচুর হাট বসছে। প্রতিদিন এসব হাট থেকে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ ট্রাক লিচু যাচ্ছে সারাদেশে।  

ঈশ্বরদীর আথাইলশিমুল গ্রামের লিচু চাষি শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, তার নিজের লিচু বাগানে ৩০টি গাছ আছে। প্রতিটি গাছ থেকেই এবার ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। 

তিনি বলেন, ‘গত বছর একটি মাঝারি আকারের গাছ থেকে ৮ থেকে ১০ হাজারের বেশি লিচু পাওয়া যায়নি।’ 

‘দীর্ঘ দিন এখানের কৃষকরা একটি লিচু সংরক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো সুফল পাননি’, বলেন তিনি।   

দেখা গেছে, লিচু সংগ্রহ শুরু হওয়ায় অনেকেই লেখাপড়া বা সংসারের কাজের পাশাপাশি বাগানে শ্রম দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করার সুযোগ পেয়েছেন। 

গাছ থেকে লিচু পাড়া হচ্ছে।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার তিলকপুর গ্রামের কলেজ ছাত্র আলিফের মতো অনেকে লিচুর মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি লিচু বাগানে কাজ করছেন। আলিফ বলেন, ‘সকালে কয়েক ঘণ্টা লিচু বাগানে কাজ করেই ৫০০ টাকা আয় করা সম্ভব।’ 

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, জেলার লিচু বাগানগুলোর আয়তন এবছর ৪ হাজার ৭৩১ হেক্টরে গিয়ে ঠেকেছে। এ সবের মধ্যে শুধু ঈশ্বরদী উপজেলাতেই আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর। এসব বাগান থেকে ৪২ হাজার ৫৭৯ টন লিচু পাওয়া যেতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান শনিবার (১৪ মে) ইত্তেফাককে বলেন, ‘লিচুর ফলন উপযোগী আবহাওয়ার পাশাপাশি গ্রীষ্মের শুরুতে বড় আকারে ঝড়-বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। এখানে কৃষকের স্বার্থে একটি লিচু সংরক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে জোড়ালোভাবে সুপারিশ করা হয়েছে।’



ইত্তেফাক/এএইচ/ইউবি