কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঘোলপাশা ইউনিয়নের আমানগন্ডা ও শালুকিয়া এলাকায় টর্নেডোর আঘাতে মসজিদ-মাদরাসাসহ প্রায় ৪০টি বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এসময় দমকা হাওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর ছোট-বড় অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়ায় স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (১৩ মে) বিকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের শালুকিয়া ও আমানগন্ডা গ্রামে সাতপুকুরিয়া পাথর থেকে হঠাৎ করে দমকা হাওয়া আঘাত হানে।
শনিবার (১৪ মে) চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মহাসড়কের উপর থেকে ভেঙে পড়া গাছপালাগুলো সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের নিকট সরকারি কোনো সাহায্য পৌঁছেনি।
স্থনীয়রা জানান, এসময় আমানগন্ডা পশ্চিম পাড়ার পাঞ্জেগানা মসজিদ টর্নেডোর আঘাতে ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া, আবুল কালাম কালুর মুরগির ফার্ম-দোকান, বসতবাড়ি, জাফর আহমেদের দোকান, সিরাজ মিয়ার বাড়ি-দোকান, সাদ্দামের বসতঘর, বাচ্চু মিয়ার দুটি বসতঘর, আনোয়ার হোসেন, পারভিন, আলী আহমেদ প্রকাশ টোয়ান, লিটন চক্রবর্তী, আব্দুল হালিম, শাহআলম কিরণ, আমান উল্লাহ, ইউসুফ, রফিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, হাজী সুরুজ মিয়া, মনছুর আলী, আবুল বাশার, ওয়াসিম, রজ্জবের নেছা, স্বজল হক, শুক্কুল মিয়া, মরণ মিয়া, আব্দুল মতিন, জাকির হোসেন, মাবুল হক, সুজনের বসতঘর ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।
এদিকে, টর্নেডো আমানগন্ডা বাজার অতিক্রম করে শালুকিয়া গ্রামের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা কমপ্লেক্সে আঘাত হানে। এতে টিনশেড ঘরসহ বিভিন্ন গাছপালা ভেঙে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরগুলো কমপক্ষে কয়েকশ গজ দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে। তবে, এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি হয়নি বলে চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, ‘শুক্রবার বিকালে টর্নেডোর আঘাতে গাছপালা ভেঙে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর পড়লে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মহাসড়ক থেকে গাছপালা সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এসময় স্থানীয় মসজিদ-মাদরাসাসহ সাধারণ মানুষের বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা হতে পারে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তানভীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রত্যেক পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা করা হবে। এ ছাড়া, সরকারি অন্যান্য সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সার্বিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’