শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আবার নির্বাচনি বিপর্যয়ের মুখে শলৎস

আপডেট : ১৬ মে ২০২২, ১৬:০১

জার্মানির এসিপিডি দল পর পর দু'বার রাজ্য নির্বাচনে খারাপ ফল করায় চ্যান্সেলর শলৎসের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইউক্রেন সংকটের মাঝে এমন আস্থার অভাব সরকারি জোটের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। 

জার্মানির চ্যান্সেলর হবার পর ওলাফ শলৎস মাত্র একটি রাজ্যে নিজের এসপিডি দলের জয়ের স্বাদ পেয়েছেন, তাও ক্ষুদ্র ও জনবিরল সারলান্ডে দলের নেতার জনপ্রিয়তাকেই সেই সাফল্যের কারণ হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। উত্তরের শ্লেসভিক হলস্টাইন রাজ্যে রক্ষণশীল সিডিইউ দলের নেতাও নিজস্ব জনপ্রিয়তার বলে এসপিডি-কে হারিয়েছেন। কিন্তু রোববার জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়ায় এসপিডি দলের ভরা়ডুবির জন্য শলৎসকেই আংশিক দায়ী করা হচ্ছে। নির্বাচনি প্রচারে তার পোস্টার, জনসভায় তার জ্বালাময়ী ভাষণ, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা সত্ত্বেও এসপিডি দলের রেকর্ড মাত্রার খারাপ ফলাফল এসেছে। তবে রাশিয়া, বিশেষ করে পুটিনের সঙ্গে এসপিডি দলের অতীত দহরম মহরমও ভোটারদের বিরক্তির অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জনমত সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত ভুল প্রমাণিত করে আবার বিপুল নির্বাচনি সাফল্য পেয়েছে রক্ষণশীল সিডিইউ দল। 

সমালোচকরা বলছেন, ইউক্রেন সংকটের মাঝে শক্ত হাতে দেশের হাল ধরা এবং জনসাধারণের সামনে নিজস্ব অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন শলৎস। অথচ তাঁরই জোট সরকারের প্রধান শরিক সবুজ দল ক্ষমতায় থেকে ভোটারদের আরও আস্থা অর্জন করছে। রোববারের রাজ্য নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে ভবিষ্যৎ সরকারের ‘কিংমেকার' হয়ে উঠেছে তারা। সরকারের তৃতীয় শরিক উদারপন্থি এফডিপি দল এসপিডি-র মতোই খারাপ ফল দেখিয়ে আবার চাপের মুখে পড়েছে। উত্তরের লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনে শলৎসের এসপিডি ও উদারপন্থি এফডিপি দল ভালো ফল করতে না পারলে বার্লিনে সরকারি জোটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। চ্যান্সেলর হিসেবে শলৎসের কর্তৃত্বও দুর্বল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

পর পর দুটি রাজ্যে পরাজয়ের ফলে জার্মানির সংসদের উচ্চ কক্ষ বুন্ডেসরাটে এসপিডি দলের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। সংসদের দুই কক্ষেই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিরোধী ইউনিয়ন শিবির আরও জোরালো প্রতিরোধ করতে পারে। বিশেষ করে দুটি রাজ্যে জয়ের স্বাদ পেয়ে চাঙ্গা বোধ করছেন সিডিইউ দলের নতুন নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস। দেশের সংকটের সময়ে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার প্রাথমিক আশ্বাস সত্ত্বেও তিনি শলৎসের নীতির বিরুদ্ধে বার বার সরব হচ্ছেন। 
নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যে নির্বাচনি বিপর্যয় সত্ত্বেও ক্ষমতায় ফেরার আশা ছাড়ছে না এসপিডি দল। সবুজ দলের সহায়তায় আগামী রাজ্য সরকারের অংশ হবার স্বপ্ন দেখছেন দলের সাধারণ সম্পাদক কেভিন ক্যুনার্ট। তাঁর মতে, ভোটাররা বিদায়ী সরকারি জোটের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভালেন নামের এক গবেষণা সংস্থাও এসপিডি ও সবুজ দলের জোট সরকারের প্রতি ভোটারদের সমর্থন রয়েছে বলে বিশ্লেষণ করেছে। অন্যদিকে সিডিইউ নেতা ও বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী হেন্ডরিক ভ্যুস্টও সবুজ দল বা এসপিডি-র সঙ্গে জোট সরকার গড়ার চেষ্টা চালাবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

ইত্তেফাক/এসআর