মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ৭ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

রংপুরে হাঁড়িভাঙা আমে ১৫০ কোটি টাকা ব্যবসার আশা

আপডেট : ২০ মে ২০২২, ১৬:৪০

রংপুরের জনপ্রিয় ও সুস্বাদু ‘হাঁড়িভাঙা’আম আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বাজারে পাওয়া যাবে। দেশে জনপ্রিয়তার তালিকায় থাকা এই আম ১৫ জুন গাছ থেকে পাড়া শুরু হবে। তবে রোদের তীব্রতা ও গরম থাকলে দু-একদিন আগেও বাণিজ্যিকভাবে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি করতে পারবেন আমচাষিরা।

রংপুরের কৃষি অফিস বলছে, গত দুই সপ্তাহের ঝড়-বাতাসে আমের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সব কিছু ঠিক থাকলে শুধু হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি করে এ বছর ১৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারবেন জেলার আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।

রংপুরের মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার চাষিরা জানান, এ মৌসুমে আম গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু ঘন ঘন বৃষ্টি আর প্রথম দফার ঘূর্ণিঝড়ে মুকুল গুলো ঝরে যায়। দ্বিতীয় দফায় আবারও ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে গুটি আমেরও একটি অংশ ঝরে যায়। সব মিলে এবার ফলন কম হয়েছে।

রংপুরের কৃষিবিভাগ ও চাষিদের ভাষ্য, রংপুরে হাঁড়িভাঙা আমের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয় প্রায় ৩০ বছর আগে। শুরুতে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ হতো। জনপ্রিয়তার কারণে এখন রংপুরের প্রত্যেকটি উপজেলার পাশাপাশি নীলফামারীর সৈয়দপুর, সদর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, খানসামা, চিরিরবন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে এই আমের বাগান।

হাঁড়িভাঙা আম।

রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের বৈশিষ্ট্য হলো এটি আঁশবিহীন, মিষ্টি ও সুস্বাদু। এই আমের আঁটিও খুব ছোট। ছাল পাতলা। প্রতিটি আমের ওজন হয় ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম। মৌসুমের শুরুতে হাঁড়িভাঙার চাহিদা বেশি থাকায় এর দাম কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এ মৌসুমে প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙা আকার ভেদে ৮০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে পারে। গত এক দশকে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা বেড়েছে হাঁড়িভাঙার। সঙ্গে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিদেশেও রফতানির সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে। হাঁড়িভাঙা আমের সম্প্রসারক অনেকেই। তাদের মধ্যে দুজন হলেন- মিঠাপুকুরের লুৎফর রহমান ও আবদুস সালাম সরকার। তারা ১৯৯০ সালের পর থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হাঁড়িভাঙা আম চাষ শুরু করেন। আবদুস ছালামের ১৪ একর জমিতে ২৫টি আমের বাগান রয়েছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, শুরু থেকেই হাঁড়িভাঙা আমের মানসম্মত উৎপাদন নিশ্চিত করতে হরমোন প্রয়োগকে নিরুৎসাহিত করে আসছি। তারপরও গোপনে অনেক চাষি হরমোন ব্যবহার করেছেন। জেলায় ১ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৬১৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষ কম হলেও হেক্টর প্রতি ১২-১৫ টন আম আসবে। জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এই আম বাজরে আসবে। সরকার নির্ধারিত সময়ের আগে আম বাজারজাত না করার জন্য আমচাষিদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। কেন না আগাম লাভের আশায় আম বাজারজাত করলে হাঁড়িভাঙা আমের প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যাবে না। 

 

ইত্তেফাক/ইউবি