নরসিংদী রেল স্টেশনে জিন্স-টপস পরায় এক তরুণীকে লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার স্টেশনে অবস্থানরত তরুণীকে প্রথমে এক নারী গালাগাল করেন এবং পরে বেশ কয়েকজন তাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে আশ্রয় নেন। নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মুসা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেউ চিহ্নিত হয়নি।
জানা গেছে, নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে জিন্স-টপস পরায় তরুণীকে প্রথমে এক নারী গালাগাল করেন এবং পরে বেশ কয়েকজন তাকে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় স্টেশনে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ওই তরুণী দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে আশ্রয় নেন। এ অবস্থায় শতশত লোকের জটলা হলে এক পর্যায়ে স্টেশন মাস্টার রেলওয়ে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ তরুণীকে স্টেশন মাস্টারের কক্ষ থেকে উদ্ধার করে রেলওয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তরুণী কোন মামলা করতে রাজি না হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশ তাকে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে তুলে দেয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে নরসিংদীসহ বিভিন্ন এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে শুক্রবার সরেজমিনে বিষয়টি খোঁজ নিতে আসেন নরসিংদী জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামল চন্দ্র বসাকসহ পুলিশের কর্মকর্তারা।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, জিন্স ও টপস পরিহিত এক তরুণী কেন এ ধরনের পোশাক পরেছেন সেটি তার সঙ্গে থাকা দুই তরুণকে জিজ্ঞাসা করছেন চশমা পরিহিত এক ব্যক্তি। প্রশ্নকর্তা ব্যক্তির সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ওই তরুণদের। সে সময় তরুণী তাদের পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় আরও লোকজন তাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে যান।
এক পর্যায়ে লাল টি শার্ট পরা এক ব্যক্তিকে পেছন থেকে এগিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে আঘাত করতে দেখা যায় এবং আক্রান্ত তরুণী চিৎকার দিয়ে দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের রুমের দিকে যান।
ঘটনার ব্যাপারে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মুসা জানান, আমরা ওই তরুণীকে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে তার নিরাপত্তার জন্য রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।
রেলওয়ে পুলিশের ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী জানান, যেহেতু তরুণী কোন অভিযোগ করতে রাজি নয়, এজন্য তাকে যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে তাকে ট্রেনে তুলে দেই।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামল চন্দ্র বসাক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে খোঁজ-খবর নিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে কোন মামলা করা হয়নি।