যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত স্রোতের ফলে বগুড়ার ধুনট উপজেলার তীর রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিতে পড়েছে বসতবাড়ি, আবাদি জমিসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। কিন্তু ভাঙনরোধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সোমবার (২৩ মে) সকাল ৯টার দিকে পানি বেড়ে যমুনা নদীর শহড়াবাড়ি ঘাট পয়েন্টে ১৫ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার সমতায় প্রবাহিত হচ্ছে। গত ১২ ঘণ্টার পানি বেড়েছে ১০ সেন্টিমিটার। এখানে পানির বিপদসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার।
এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যমুনার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অব্যাহত ভাঙনে ১৯ মে পুকুরিয়া-ভূতবাড়ি এলাকায় তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ বিলীন হয়। সর্বশেষ সোমবার সকাল ৫টার দিকে একই এলাকায় আরো ৮০ মিটার অংশ বিলীন হয়েছে। এ নিয়ে একই স্থানে প্রায় ১৮০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে বাঁধ এলাকা। ঘরবাড়ি হারানোর ভয়ে আছেন নদী তীরবর্তী মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে পুকুরিয়া-ভুতবাড়ি এলাকার ভাঙনরোধে যমুনার ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালে প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০০ মিটার অংশে বাঁধ রক্ষায় কাজ করা হয়। নদীর তীরে স্লোপ করে তার ওপর জিও চট বিছিয়ে সিসি ব্লক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই কাজ শেষ হয়। বর্তমানে পানির স্রোতে সিসি ব্লকে বাঁধানো তীর রক্ষা বাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে তীর রক্ষা বাঁধের বেশকিছু সিসি ব্লক।
পুকুরিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভাঙন ধেয়ে আসছে জনবসতি ও বাঁধের দিকে। আমার বাড়ি থেকে নদী ভাঙনের দূরত্ব মাত্র ৫ মিটার। ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নিলে যে কোন সময় আমার বাড়িসহ আশপাশের অর্ধশত বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হবে। ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিয়ে বসতবাড়ি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বার বার অনুরোধ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিবারন চক্রবর্তী জানান, যমুন নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ভাঙনরোধে জরুরি মেরামত কাজের ফাইলপত্র দাপ্তরিকভাবে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে কাজ করা হবে।