ব্রাজিলে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। দেশটিতে ২০২১ সালের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ঐ বছরে নিজের জন্য কিংবা পরিবারের জন্য ৩৬ শতাংশ লোক তাদের একবেলা খাবার জোগাড় করতে পারেনি। এটি ২০১৯ সালে ছিল ৩০ শতাংশ। ক্ষুধা বা খাদ্যনিরাপত্তা ঝুঁকি হলো এমন একটি অবস্থা যাতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একজন ব্যক্তি মৌলিক পুষ্টিসম্পন্ন চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত খাবার খেতে অক্ষম।
ব্রাজিলের একাডেমিক প্রতিষ্ঠান গেটুলিও ভার্গাস ফাউন্ডেশন (এফজিভি) সম্প্রতি গ্যালাপ ওয়ার্ল্ড পোলের একটি তথ্য প্রকাশ করে। এতে ২০০৬ সালে ডেটা ট্র্যাকিং শুরু হওয়ার পর থেকে ল্যাটিন আমেরিকার বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনকারী দেশটিতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এই প্রথমবারের মতো বিশ্বের গড়কে ছাড়িয়ে গেছে। দেশটি বিশ্বের শীর্ষ কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি হওয়া সত্ত্বেও ব্রাজিলিয়ানরা এই ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।
এফজিভির সোশ্যাল পলিসিস সেন্টারের পরিচালক ও গবেষণাপত্রের লেখক অর্থনীতিবিদ মার্সেলো নেরি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে হু হু করে বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম। তিনি বলেন, এটি একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। করোনা মহামারি চলাকালীন ব্রাজিলের সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ মানুষের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২০২১ সালে ৭৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০১৯ সালে ছিল ৫৩ শতাংশ এবং জিম্বাবুয়ের স্তরের কাছাকাছি। পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, জিম্বাবুয়েতে বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সর্বোচ্চ হার ৮০ শতাংশ।
সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে যে, ২০২১ সালে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় লিঙ্গ বৈষম্য ব্রাজিলে ছয় গুণ বেশি ছিল। এদিকে, ব্রাজিলে গত বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দেশটির প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো রাষ্ট্রীয় তেল জায়ান্টের প্রধানকে বরখাস্ত করেছেন সম্প্রতি। তাকে দায়িত্ব থেকে মাত্র ৪০ দিনের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হলো। দেশটির বার্ষিক মূল্যস্ফীতি এখন ১২ শতাংশের বেশি এবং ফাঁকা হচ্ছে সাধারণ মানুষের পকেট।