বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কেঁচো সার প্রয়োগে বাড়ছে জমির উর্বরতা, কমছে খরচ

আপডেট : ২৮ মে ২০২২, ১৮:২৩

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের কৃষকদের কাছে কেঁচো সার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি এর চাহিদা বাড়ছে জেলাব্যাপী। কেঁচো সার উৎপাদন ও ব্যবহারে সফলতার মুখ দেখছেন কৃষকরা। 

এলাকার বিভিন্ন গো-খামার থেকে ও স্থানীয়ভাবে গোবর সংগ্রহ করে কেঁচো দিয়ে সার তৈরি করছেন কৃষকরা। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না, অপরদিকে জৈব সার উৎপাদন হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনীর মাধমে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করা হচ্ছে। 

উপজেলার বানিয়াগাঁতী গ্রামের কেঁচো সার উৎপাদনকারী আবু তালেব বলেন, ‘আমরা ফেটিডা প্রজাতির কেঁচো দিয়ে সার তৈরি করে থাকি। কারণ এই প্রজাতির কেঁচো খাদ্য গ্রহণ বেশি করায় মল ত্যাগ বেশি করে, ফলে সার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। দিন দিন কেঁচো সার ব্যবহারে জনপ্রিয়তা বাড়ছে। কেঁচো সার উৎপাদন করে আমি স্বাবলম্বী হয়েছি।’

উপজেলার নুরনগর তালপট্টি গ্রামের কেঁচো সার ব্যবহারকারী কৃষক লিটন বলেন, ‘আমি আগে ইউরিয়াসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছি। বিগত কয়েক বছর হলো আমি কেঁচো সার ব্যবহার করি। কেঁচো সার উৎপাদন করা খুব সহজ। এ সার জমিতে প্রয়োগ করলে মাটির উর্বরতা ও পানি ধারণক্ষমতা এবং গাছের আয়ুষ্কালও বৃদ্ধি পায়। জমিতে কেঁচো সার প্রয়োগে আগের তুলনায় আমার খরচ কম হয় এবং ফসলের ফলন বেশি হয়।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘গবাদিপশুর গোবর একসময় কৃষক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতো। এখন কেঁচো সার উৎপাদন সহজলভ্য হওয়ায় কৃষকরা গোবর থেকে কেঁচো সার উৎপাদন করতে পারছেন। এতে জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেঁচো সার প্রয়োগে একদিকে যেমন মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে রাসায়ানিক সারের ব্যবহার কম হওয়ায় ফসলের উৎপাদন খরচ কমছে। এবং কৃষক লাভবান হচ্ছে।’ 

কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কেঁচো সারে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সালফার থাকে এবং গ্রহণযোগ্য আকারে থাকে, ফলে গাছ অতি সহজেই গ্রহণ করে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের কেঁচো সার ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করার পাশাপাশি সার উৎপাদন ও ব্যবহারের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।’

ইত্তেফাক/এএইচ