শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল

যন্ত্রপাতির অভাবে ব্যাহত চিকিৎসা, দুর্ভোগে রোগী

আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ০২:০৯

নারায়ণগঞ্জে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-আয়ের মানুষের চিকিৎসাসেবার অন্যতম ভরসাস্থল নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়া)। কিন্তু এ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। আবার কিছুদিন পরপর আলট্রাসনোগ্রাফির মেশিন অচল হয়ে পড়ে থাকে। এতে রোগীরা দুই-তিন গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাচ্ছেন।

হাসপাতালের প্রশাসনিক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের এক্সরে মেশিন ও আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন রয়েছে। তবে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন না থাকায়, চিকিৎসকরা রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে হয় নামমাত্র কিছু রক্ত পরীক্ষা। এ ছাড়া অন্যান্য উন্নত পরীক্ষার জন্য নেই সিটি স্ক্যান ও এমআরআই মেশিন। উন্নত মেশিনের চাহিদাপত্র দিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হলেও কোনো সদুত্তর পায়নি হাসপাতাল কতৃ‌র্পক্ষ।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টের সূত্রমতে, প্রতিদিন জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে। শুধু নারায়ণগঞ্জ শহর নয়, আশপাশের মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুর থেকেও রোগীরা এসে এখানে চিকিৎসা করতে আসে। তারা কেবল চিকিৎসক দেখানো ছাড়া অন্য সেবা থেকে বঞ্চিত হন। না পান ওষুধ, না হয় ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা। গত মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের লম্বা লাইন। তবে রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্যগত সমস্যার পরীক্ষা করাতে ছুটছেন বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে কয়েক জন রোগী ছাড়া রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সামনে রোগী নেই। আবার কেউ কেউ পরীক্ষা করাতে এসে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন নেই জেনে ফিরে যাচ্ছেন। রেডিওলোজি বিভাগের দায়িত্বরত কর্মচারীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, রোগী তুলনামূলক কম। কারণ ডিজিটাল এক্সরে মেশিন হাসপাতালে নেই। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট জানান, আলট্রাসনোগ্রাফির মেশিন কিছু দিন পরপর নষ্ট হয়ে পড়ে। এ কারণে সব সময় আলট্রাসনোগ্রাফি করা সম্ভব হয় না।

ভুক্তভোগী রোগী ইমরান বলেন, তার এক্সরে করানো দরকার। কিন্তু যন্ত্রপাতি না থাকায় বাইরে থেকে অনেক টাকা দিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়েছে। ১ হাজার ৬০০ টাকা লেগেছে। হাসপাতালে করাতে পারলে হয়তো অনেক কম টাকা লাগত।

শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রোগী জসিম বলেন, ‘হাসপাতালের কয়েক জন কর্মচারী মিলে বাইরে একটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে লোক পাঠিয়ে ব্যবসা করছেন। হাসপাতালের মেশিনে পরীক্ষা করাতে পারি না। মেয়ের টনসিল হইছে। অপারেশন করাইতে হবে। পরিবারে এত রোজগার নাই যে প্রাইভেটে চিকিৎসা করাব। সরকারি হাসপাতালে আসি কম টাকায় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এখন সেটাও জোটে না। চিকিত্সা মানেই অনেক খরচ।’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. এস কে ফরহাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হাসপাতালে ডিজিটাল এক্সরের মেশিন নেই। আলট্রাসনোর মেশিন নষ্ট। এ কারণে রোগীদের সব পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। মেশিনের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে । তবে এ পর্যন্ত কোনো উত্তর মেলেনি। 

ইত্তেফাক/জেডএইচডি