ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে এ বছর অতিবৃষ্টিতে পানি বাড়ার ফলে মৌসুমি বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জের কৃষকরা। গত বছর ধান চাষে লাভবান হওযায় এবছর আবাদ বেড়েছে, ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু এবছর এই অঞ্চলের বিলের বেশির ভাগ ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে, এমনটাই বলছেন কৃষকেরা। ফলে বাম্পার ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে।
অতিবৃষ্টির ফলে ধান ক্ষেতে পানি জমেছে। ধান গাছ নুইয়ে পড়েছে । একেতো শ্রমিক সংকট, তার ওপর পানিতে থাকা ধান কাটতে অতিরিক্ত মজুরি গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। শ্রমিক সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। যাও পাওয়া যাচ্ছে, তাও আবার শ্রমিককে মজুরি দিতে হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা রোজ।
কৃষকরা জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলার চালনাইচক, বাহ্রাচক, চুড়াইনচক, বারুয়াখালীচক, টিকরপুরচক, আড়িয়াল বিল, গালিমপুর পদ্যির চক, বক্সনগরচক, কাঠালীঘাটাচক, বড়গোবিন্দপুরচকসহ উপজেলার সব আবাদি এলাকায় বোরো এবং আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু আগাম বন্যা ও বৃষ্টির পানির কারণে বাম্পার ফলনেও ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকেরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আড়িয়াল বিলের পদ্যির চক ও কাঠালীঘাটার চকে স্থানীয় কিছু নানা পেশার মানুষ পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান কাটছেন।
আলগীচর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘অসময়ের বৃষ্টি ও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ৬ পাখি জমির ধানসহ বিলের নিচু জমির শত শত বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কেউ ধান ঘরে তুলতে পারেনি।’
গালিমপুর পদ্যির চকের কৃষক মতি খান বলেন, ‘সময়মতো শ্রমিক না পাওয়াতে বিলের বেশির ভাগ ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেকে আবার বেশি দামে শ্রমিক নিয়ে তিনবেলা খাওয়া দিয়ে ধান কেটে ঘরে নিতে পারছেন। খরচের চেয়ে লোকসান গুণতে হয়েছে।’
দোহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুন ইয়াকুব বলেন, ‘এবার আমাদের দোহারে ৪৩.২০ হেক্টর ধান হওয়ার কথা ছিল কিন্তু বৃষ্টি ও পানি বৃদ্ধির ফলে ৪৩ হেক্টর ধান হয়েছে। দোহারে ক্ষতির পরিমাণ ২০ শতাংশ আর এখন জমিতে যে ধান আছে, তা ২৫-৩০ শতাংশ হবে। বেশির ভাগ ধান কাটা শেষ, তাই আমরা ক্ষতির আশঙ্কা কম করছি।’