সাব্বির রহমান, ১০ বছর ধরে রাজধানীতে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ও বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রিকশা চালান। তার রোজগারে চার সদস্যের পরিবারে ভরণপোষণ চলে। মেয়ে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ছেলের বয়স ২ বছর।
শুক্রবার বিকেলে সাব্বির রাজধানীর লালবাগ চৌরাস্তায় রিকশা নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজেট বুনি নে, চালের দাম কমবে কি না সেডা কন।
তিনি বলেন, রিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনো রকম চলে। চারজনের সংসার চালাতে বেশ কষ্ট হয়। তার ওপর চাল-ডাল-তেলসহ সব জিনিসের দাম বাড়ছে।
প্রায় একই রকম সুরে কথা বলেন রাজধানীর আজিমপুর এলাকার মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, রাস্তায় ব্যবসা করতে হলে বিভিন্ন জনের টাকা দিতে হয়। এরপর প্রতিদিন সমান ফল বিক্রি হয় না। আবার অনেক ফল পচে নষ্ট হয়। ফলে লাভের চেয়ে অনেক সময় লোকসান হয়। কিন্তু প্রতিদিন একই রকম চাল চাল লাগে। সঙ্গে অন্যান্য জিনিস কিনতে হয়। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে সংসার চালাতে কষ্ট হয়।
এদিকে শুক্রবার রাজধানীর আজিমপুর, কেল্লার মোড়, পলাশী বাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা যায় গেছে, পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, ঝিঙে ও চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, কাঁচ কলার হালি ২০-২৫ টাকা, আলু ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফা বেড়েছে। লুজ সয়াবিন প্রতি লিটার ১৮৫ টাকা, ১ লিটারের বোতল ২০৫ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৯৯৭ টাকা ও পামতেল ১৫৮ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাজারে আগের দামে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে কাওরান বাজারের ভোজ্যতেলের ডিলার মিলু স্টোরের ম্যানেজার বিপ্লব সাহা জানান, বর্ধিত দামের তেল এখনো কোম্পানি থেকে এখনো সরবরাহ করেনি। তাই আগের দামে তেল বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে আমদানি রসুনের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। ব্যবসায়ীরা আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ১৫০-১৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০-১৯০ টাকা। তবে দেশি রসুনের কেজি আগের মতো ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পেঁয়াজ গত সপ্তাহের মতো ৩৫-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দামেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। ব্যবসায়ীরা বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫-১৬০ টাকায়। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি ১৭০-১৯০০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।