পশ্চিমের জেলাগুলোতে এবার পাট চাষ বেড়েছে। লক্ষ্যমাত্রার শতকরা চার ভাগ বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। গত বছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় জেলাগুলোতে চাষিরা অধিক জমিতে পাট চাষ করেছেন। তবে পাট উঠার আগ মুহূর্তে পাটের দরপতনে হতাশ চাষিরা। বিগত বছরের তুলনায় সম্প্রতি মণপ্রতি পাটের দাম অন্তত এক হাজার টাকা কমেছে।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) ঝিনাইদহের শৈলকুপা হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি মণ গত বছরের পাট আড়াই হাজার টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে।
ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, চাষির ঘরে এখনো গত বছরের পাট আছে। আবার পনের দিনের মধ্যে বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করবে। তিনি জানান, এক মাস আগে প্রতি মণ পাট সাড়ে তিন হাজার টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছিল। বর্তমানে প্রতি মণ পাট অন্তত এক হাজার টাকার কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা যায়, যশোর জেলায় ২৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর, ঝিনাইদহে ২৩ হাজার ৫৯০, মাগুরায় ৩৬ হাজার ৯৩০, কুষ্টিয়ায় ৪১ হাজার ৬৭৩, চুয়াডাঙ্গায় ২০
হাজার ৭২৯ হেক্টর ও মেহেরপুর জেলায় ২১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। প্রথম দিকে বিক্ষিপ্তভাবে পাটক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। কীটনাশক প্রয়োগের পর পোকা দমন হয়েছে।
সরেজমিনে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে পাটের অবস্থা ভালো। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় পাটগাছ দ্রুত বেড়ে উঠছে। যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর গ্রামের চাষি ইজাজুল ইসলাম বলেন, তাদের এলাকায় এবার পাটের অবস্থা ভালো। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার চরসোনদাহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, এবার সাত বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাটের অবস্থা ভালো। মাসখানেকের মধ্যে পাট কাটা শুরু হবে। তবে পাটের দাম পড়ে যাওয়ায় তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।
মনোহরপুর গ্রামের চাষি মাসুদ হাসান পান্না বলেন, পাট জাগের পানির অভাব দেখা দেয়। পাট কেটে দূর থেকে এনে জাগ দিতে অনেক টাকা খরচ হয়। মেহেরপুর সদর উপজেলার তেরঘরিয়া গ্রামের চাষি জিয়াউর রহমান বলেন, তাদের এলাকায় চাষিরা পাটের ভালো ফলন আশা করছে। তবে দাম পড়ে গেলে লোকসান হবে। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়ার উপপরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও রোগবালাই কম হওয়ায় এবার পাটের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।