শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অবশেষে কিয়েভে গেলেন শলৎস

আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ১৪:৫৪

কিয়েভ সফরে এবার জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ইউক্রেনের ক্ষোভ কিছুটা হলেও কমাতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জার্মানির যথেষ্ট সহায়তার অভাব নিয়ে অসন্তুষ্ট কিয়েভ।ইউক্রেন যুদ্ধের চতুর্থ মাসে সে দেশের রাজধানী কিয়েভে যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। তবে একা নয়, সঙ্গে থাকছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগি।

যুদ্ধের সময় অ্যামেরিকা ও ইউরোপের একাধিক নেতার কিয়েভ সফরের পর অবশেষে জার্মান চ্যান্সেলরের উপস্থিতি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে জার্মানির প্রতি বিশাল প্রত্যাশা এখনো পূরণ না হওয়ায় ইউক্রেনের ক্ষোভ শলৎস অন্তত কিছুটা দূর করতে পারেন কিনা, সে দিকেই সবার নজর। প্রাথমিক দুর্বলতা কাটিয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনী জমি দখলে যথেষ্ট সাফল্য দেখাচ্ছে। হামলাকারীদের মোকাবিলা করতে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে আরও অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম চেয়ে আসছে ভলোদোমির জেলেনস্কির সরকার। 

অ্যামেরিকা, ব্রিটেন ও পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশ সংকটের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অনেক সামরিক সহায়তা দিয়ে চললেও জার্মানি, ফ্রান্স ও ইটালির ভূমিকায় ইউক্রেনের নেতৃত্ব বার বার হতাশা প্রকাশ করছে। রাশিয়ার প্রতি এই তিন দেশের মনোভাবও প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিয়েভ সফরে শলৎস, মাক্রোঁ ও দ্রাগির ঝুলিতে কত পরিমাণ অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম থাকবে, সে দিকেই সবার নজর। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও অস্ত্র সরবরাহে বিলম্ব দূর করতেও শলৎস কতটা উদ্যোগ নেবেন, সেটাও চর্চার বিষয়। 

তবে যথেষ্ট সামরিক সহায়তার ঘাটতি পূরণ করতে ইউক্রেনের প্রতি রাজনৈতিক সংহতি দেখাতে পারেন এই নেতারা। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রশ্নে ইইউ-র এই তিন প্রধান শক্তির সমর্থন পেলে কিয়েভের ক্ষোভ কিছুটা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বুধবারই বলেন, যে ইউক্রেনের মানুষের সাহসী সংগ্রামের মাঝে ইউরোপের স্পষ্ট রাজনৈতিক সংকেতের প্রয়োজন রয়েছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার ইইউ কমিশন ইউক্রেনকে প্রার্থী দেশ হিসেবে স্বীকৃতির প্রশ্নে নিজস্ব অবস্থান জানাবে। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার কড়া নিন্দা করলেও মস্কোর সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে জার্মানি ও ফ্রান্স। ন্যাটো তথা ইইউ সম্পর্কে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রোষ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শলৎস ও মাক্রোঁ অতিরিক্ত সংযম দেখাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে। 

মঙ্গলবার জার্মানির এক টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, এ ক্ষেত্রে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য না রেখে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে। শলৎস অবশ্য বার বার এমন অভিযোগ অস্বীকার করে অস্ত্র সরবরাহে বিলম্বের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন। তাঁর মতে আধুনিক ও জটিল সামরিক সরঞ্জাম যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর আগে ইউক্রেনের সৈন্যদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ শেষ করতে হবে। জার্মানিতে বর্তমানে সেই প্রশিক্ষণ চলছে। 

তবে প্রবল সমালোচনার মুখে কোণঠাসা জার্মান সরকার অস্ত্র সরবরাহের প্রশ্নে স্বচ্ছতা ও স্পষ্ট অবস্থান না দেখিয়ে বার বার নতুন যুক্তি পেশ করায় জার্মানিতেও অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। এমনকি এই সংকটে রাশিয়াকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতেও জার্মান নেতৃত্বের দ্বিধা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।

ইত্তেফাক/এএইচপি