কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে ২৫ বছর ধরে অবহেলিত জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বোড়াই-ধুনটের কাঁচা রাস্তাটি চলাচলের জন্য একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চলাচলে জনসাধারণকে পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। দেড় কিলোমিটার রাস্তার অনেকটাই ভেঙে গেছে আবার বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙে যাওয়ার স্থানে স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ ছয় গ্রামের প্রায় ৯ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এই রাস্তা ব্যবহার করেন। গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেছেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অবহেলার কারণে কাঁচা রাস্তাটি বছরের পর বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বোড়াই সংযোগ স্থল থেকে ধুনট পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি পাকা না করায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। রাস্তাটি প্রায় ২৫ বছর যাবত সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই হাটু পানি জমে থাকে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষকে পানি, কাদা ভেঙে যাতায়াত করতে হয়। ভ্যান, অটোভ্যান, ইজিবাইক, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল তো দূরের কথা মানুষ পায়ে হেঁটে চলতে পরেন না। চলাচলের বিকল্প কোনো রাস্তাও নেই।
উপজেলার ধুনট গ্রামের বাসিন্দা হবিবর হোসেন বলেন, ‘উপজেলার বোড়াই-ধুনটের প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা সংযোগ রাস্তাটি পাকা হলে বিভিন্ন গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে। মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বেগ পেতে হবে না। শ্রমজীবী মানুষ ভ্যান, অটোভ্যান, ইজিবাইক, অটোরিকশা চালিয়ে সহজে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। এলাকার কৃষকরা ধান, পাট, আলু, কাঁচা ফসল কম খরচে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।’
উপজেলার আরবাব গ্রামের মো. মোমিন, খোকা, শাহীন, সোহেল ও জলিলসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ২৫ বছরেও রাস্তাটি পাকা হয়নি। এ গ্রামের মানুষ চলাচলের জন্য মাঝে মধ্যে নিজেদের উদ্যোগেই মাটি ও বাঁশ দিয়ে মেরামত করেন। স্থানীয় জপ্রতিনিধি ও এমপি রাস্তার বিষয়টি আমলে নেয় না বলেই সংস্কার হচ্ছে না। আমরা এই কাঁচা রাস্তাটি খুব দ্রুত পাকা চাই।’
উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমি এ এলাকার মেম্বার হিসেবে সবসময় চাই রাস্তাটি পাকা হোক। কারণ, রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার মানুষের চলাচলের অনেক সুবিধা হবে। কিন্তু পাকা করতে হলে আমাদের জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সুনজরের প্রয়োজন। কারণ তিনিই পারেন রাস্তাটি পাকা করতে।’
কালাই উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার বোড়াই-ধুনট কাঁচা সংযোগ রাস্তাটি পাকা করার কাজ আমাদের কাছে এসেছে। এলাকাবাসীর চলাচলের উপযুক্ত করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’