উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নদ- নদীর পানিও বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শনিবার সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার পুঠিয়াবাড়ি, চরমালশাপাড় কালিয়াহরিপুর ইউনিয়নের চররামগাঁতী, পাইকপাড়া, মোড়গ্রাম, সয়দাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব মোহনপুর, পূর্ব বাঐতারাসহ বাঁধ অভ্যন্তরে বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জেলার অভ্যন্তরীণ করতোয়া, ফুলজোড়, ইছামতি, বড়ালসহ বিভিন্ন নদ-নদী খাল বিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
তাঁত শ্রমিক মোকতেল হোসেন বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সয়দাবাদ ইউনিয়নের বাঁধ অভ্যন্তরে তাত কারখানাগুলোতে পানি উঠে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে তাঁত শ্রমিকেরা সাহায্যের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’
একই এলাকার তাঁত মালিক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘চারদিন ধরে তাঁত ঘরে পানি ওঠায় কারখানা বন্ধ রয়েছে।’
এদিকে ছাতিয়ানতলী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, ‘তিনদিন হলো বাড়িতে পানি উঠছে। এখনও কোনো সহায়তা পাইনি। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।’
যমুনা নদীর পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। এতে তিল, কাউন, বাদাম, পাট ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে।
এবিষয়ে জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, ‘বন্যাদুর্গত বানভাসি মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ইতোমধ্যেই ৯১১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২২ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে সোমবার (২০ জুন) সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, রেলকুচি, চৌহালিও শাহজাদপুর উপজেলায় বানভাসি মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ১৪০ মেট্রিক টন চাউল প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘চৌহালি উপজেলায় ৩ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণের জন্য বন্যায় স্ব স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে।’