যু্বলীগের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, বিএনপি পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করে যাচ্ছে। এর আগেও তারা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নোংরা রাজনীতি করেছে, আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু নিয়ে বিদেশিদের সাথে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, এখন তারা বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তির রাজনীতিতে ব্যস্ত। বিএনপি-জামায়াত বন্যার্তদের পাশে না থাকলেও বন্যা নিয়ে অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর প্লাটিনাম পার্কে যুবলীগের উদ্যোগে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পরশ বলেন, যা কিছু বঙ্গবন্ধুকন্যা করে যাচ্ছেন সবকিছু আমাদের নতুন প্রজন্মের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য। একদিকে তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী মাইলফলক সৃষ্টি করেছেন, অন্যদিকে তিনি পরিবেশ উন্নয়নেও সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আত্মকেন্দ্রিক, বর্তমান নির্ভর রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না, তিনি সুদূরপ্রসারী ও সার্বজনীন রাজনীতির পথিকৃৎ। অপরদিকে তথাকথিত বিরোধী দল, বিএনপি-জামাত নেতারা তাদের সংকীর্ণ এবং আত্মকেন্দ্রিক ভোগের রাজনীতি ছাড়তে পারছে না।
সিলেট বিভাগসহ নেত্রকোণা ও অন্যান্য জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি সমবেদনা এবং বন্যার্ত মানুষদের সাহায্য করতে গিয়ে নিহত সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা টিটু চৌধুরী এবং নেত্রকোণা কেন্দুয়া উপজেলা যুবলীগ নেতা আবির আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। যেটা সরকার করছে, কিন্তু এগিয়ে আসতে হবে সকল রাজনৈতিক দলগুলির এবং জনপ্রতিনিধিদের। আমরা যুবলীগের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের বন্যার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা জানেন আমাদের সিলেট, সিলেট মহানগর, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা যুবলীগের বিভিন্ন শাখা এই ত্রাণ কার্যক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আমাদের একাধিক নেতাকর্মী ইতোমধ্যে বন্যায় আটকে পরা মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। এ মুহূর্তে প্রধান করণীয় হলো বিপন্ন মানুষগুলোকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশ সেনা বাহিনী এ ক্ষেত্রে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যেটা সত্যি প্রশংসনীয়। উদ্ধার কর্মসূচির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রীও পৌঁছাতে হবে বন্যা কবলিত এলাকায়। যেসব স্থানে রান্নার সুযোগ থাকবে না, সেসব স্থানে শুকনো খাবার সরবরাহ করতে হবে।
তিনি যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটা বিরাট হুমকি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা আমাদের সবার জন্য একটা বিরাট প্রতিবন্ধকতা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশব্যাপী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের অন্তত একটি করে ফলজ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানাচ্ছি। বৃক্ষ শুধু আমাদের পুষ্টিই প্রদান করবেনা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও আনয়ণ করবে। বৃক্ষ শুধু পরিবেশকেই রক্ষা করে না; এটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখে। গাছ এই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ। যে সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সকলের কর্তব্য। এই সম্পদের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি পূরণের জন্য লাগামহীন বৃক্ষনিধন বন্ধ করা দরকার। পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ জোরদার করার প্রতি আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।
বেশি বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে যুবলীগ প্রেসিডেন্ট বলেন, আসুন গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই-এ স্লোগানকে যদি আমরা মিলিতভাবে গ্রহণ করি ও কাজে লাগাই, তাহলে আমাদের বৃক্ষসম্পদ বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবেশও সুন্দর হবে। এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। নামকাওয়াস্তে দায়সারা ভাবে গাছ লাগাবেন না, গাছের পরিচর্যাও প্রয়োজন। এমন জায়গায় লাগাবেন না- মানুষের পথের মধ্যে-যে পরের দিন মানুষজন গাছটা তুলে ফেলবে। আমাদের জনসচেতনামুলক কাজও করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করতে উৎসাহ দেয়ার জন্য স্ব স্ব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থান, স্থাপনা ও সড়কগুলোতে ব্যানার ও ফেস্টুন লাগাবেন।