সুনামগঞ্জের ছাতকে ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে শত-শত ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, মাছের খামার। চরম দুর্ভোগে রয়েছেন উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন সহ পৌরসভার মানুষ।
গত বুধবার (১৫ জুন) বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় ছাতক। এরপর থেকে পানিবন্দী অবস্থায় এ এলাকার মানুষ। প্রাণ বাঁচানোর জন্য হাহাকার চলছে। গ্রামের বাড়ির ছাদে গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। বন্যার ফলে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগও।
এদিকে বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া দুই তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের একজনের নাম তমাল আহমেদ (২২), তিনি সেকালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে। তমালের বড় ভাই ইজাজুল হক রনি বিষয়টি জানান। ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ বলেন, খালেদ আহমেদ (৩০) নামের আরেক তরুণের লাশ পাওয়া গেছে। তিনি ছৈলা-আফজালাবাদের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
বন্যার স্রোতে ভেসে যান কর্মসংস্থান ব্যাংক ছাতক শাখার ম্যানেজার আব্দুল লতিফ। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রতাবপুর এলাকার একটি গাছ আকড়ে ধরে রক্ষা পান। উপজেলার মাছুখালি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সাগর সরকার নামের এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে, তিনিও স্রোতে ভেসে গিয়েছিলেন। এমন আরও অনেকই ভেসে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন।
এ দিকে পানিতে সকল হাট-বাজার ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার ফলে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সকল পণ্যের দাম দ্বিগুণ আকারে বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে মানুষের অসহায়ত্ব আরও বেড়েছে। উপজেলার সকল গ্রাম অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকায় দেখা দিয়েছে চোর-ডাকাতের আতঙ্ক।
সব এলাকা পানিতে ডুবে থাকায় হাড়ি পেতে রান্না করারও জায়গা নেই। এ অবস্থায় মানুষ তাকিয়ে আছেন সরকারি-বেসরকারি ত্রাণের আশায়। সোমবার (২০ জুন) পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও শহর এবং গ্রামাঞ্চলের বাড়িঘরে এখনো হাঁটুসমান পানি রয়েছে। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। নৌকা না পাওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ করা যাচ্ছেনা। ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুকুলে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুকনো খাবারের পাশাপাশি রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।