শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

স্বপ্নজয়ের পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ২২:০৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজতর করার লক্ষ্যে দেশের বৃহৎ নদীসমূহের ওপর দিয়ে সেতু নির্মাণ করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালের ৪ জুলাই বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ২০১৫ সালে দেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণকরেন।

জাতির আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়েদেশের উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামোনির্মাণে তাদের মেধা, প্রজ্ঞা, সততা এবং নির্ভরশীলতার প্রতিফলন রেখে আসছে। একইসঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও কোন কোন কেপিআই এর নিরাপত্তা কাজেও সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত রয়েছে। যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর নিরাপত্তাকল্পে যেভাবে যমুনা পাড়ে গড়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস সেভাবেই পদ্মার উভয় পাড়ে তৈরি হয়েছে শেখ রাসেল সেনানিবাস (মাওয়া-জাজিরা)।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মাওয়া ঘাটে পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে সেতুবিভাগের সাথে সমন্বয় পূর্বক পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ শৈলীতে ইঞ্জিনিয়ার পরামর্শক নিয়োগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পদ্মা সেতু প্রকল্পের সাথে সরাসরিসম্পৃক্ত হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সম্পাদিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা দায়িত্বগুলো হলো-মাওয়া প্রান্তে ৭৭ বর্গ কি.মি. ও জাজিরা প্রান্তে ১৩২ বর্গ কি.মি. এলাকার নিরাপত্তা বিধান এবং সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে ৬ কি.মি. নদীপথ প্রত্যক্ষভাবে নজরদারিতে রাখা এবং সেতুর নির্মাণ কার্যসংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি ব্যক্তিবর্গের, শ্রমিকদের, আগত অতিথিবৃন্দের এবং সকল সরঞ্জামাদির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নিরাপত্তা মূল্যায়ন এবংসেতু কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিঃ

জাতীয় নিরাপত্তা ও আর্থ-সামাজিক মূল্যায়নে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম।এটি বাংলাদেশের এই পর্যন্তসর্ববৃহৎ ভৌত অবকাঠামো। এই সেতুর সঙ্গে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক সক্ষমতা এবং জাতি হিসেবে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাওয়ার সংকল্প প্রভাষিত। এপ্রেক্ষিতে পদ্মা সেতুর ওপর নির্মাণকালীন এবং নির্মাণ পরবর্তী যে কোন ঝুঁকি বা হুমকি জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচ্য। পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে শুধু সংযোগই করবে না, এটি এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ককে যুক্ত করবে। অন্যদিকে পায়রা ও মংলা বন্দরসহ দক্ষিণের সকল উৎপাদনশীল কল-কারখানা, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি সংযোগ জাতীয় অর্থনীতি উন্নয়নে অভাবনীয় ভূমিকা রাখবে। কাজেই বাংলাদেশের অহঙ্কার এবং জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের বাহক এই বৃহৎ প্রকল্পের উপর নির্মাণকালীন এবং নির্মাণ পরবর্তী নাশকতা পরিকল্পনার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া সমীচীন হবে না। প্রকল্পের শুরু হতেই প্রকল্প কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি (সর্বোচ্চ ১২৯৬ জন বিদেশি নাগরিক একই সময়ে ছিলেন) গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের ক্ষতিসাধন, প্রকল্প এলাকার ভেতর শ্রমিক অসন্তোষ, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অতিমূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী ও সরঞ্জামাদি পাচার অথবা ক্ষতিসাধন, সেতু সংলগ্ন অথবা নদী শাসন এলাকা হতে অবৈধ বালু উত্তোলন, ব্রীজের পিলারে নৌযানসমূহের ধাক্কা, প্রকল্প এলাকায় শ্রমিকদের মধ্যে মাদকের প্রভাব ইত্যাদি সম্ভাব্য ঘটনাসমূহ প্রকল্পের ওপর প্রত্যক্ষ হুমকি ছিল।এর পাশাপাশি পদ্মা সেতু প্রকল্প এবং তদসংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা, সড়ক দুর্ঘটনা, প্রকল্পের মালামাল পরিবহনে যানজট এবং অবৈধ চাঁদা আদায়, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, শীতকালে নদীর নাব্যতা হারানোর মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনাওপদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজকে বিঘ্নিত করার সম্ভাবনা ছিল।

এ সকল বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে এ নিয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি হয় যার উল্লেখযোগ্য অংশহলো-মাওয়া ও জাজিরা এলাকায় স্থাপিত ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড ভূমিতে এবং নদীতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি এবং সরঞ্জামাদির নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্থায়ী নিরাপত্তা চৌকি ও অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করবে এবং দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ২৪ ঘণ্টা টহল ও নৌ টহল পরিচালনা করবে মাওয়া-জাজিরা প্রান্তেএবং নদীপথেযে কোন উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি করেইমারজেন্সি রেসপন্স দল প্রস্তুত থাকবে এবং সেতু কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয়পূর্বক প্রকল্প এলাকার বাইরে যেকোন অনভিপ্রেত ঘটনা যা সেতু প্রকল্পের নির্মাণ কাজে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিরসনের জন্য সকল কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানকল্পে ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তেদুটি অস্থায়ী সেনানিবাস স্থাপন করা হয়। গত ২৯ মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাজিরা প্রান্তে ‘শেখ রাসেল সেনানিবাস’ নামে একটি স্থায়ী সেনানিবাসের উদ্বোধন করেন। এই সেনানিবাস ভবিষ্যতেও পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সেনাবাহিনী কর্তৃক সম্পাদিত নিরাপত্তার দায়িত্বসমূহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এখানে তুলে ধরা হলোঃ

(১) মাওয়া-জাজিরা ও নদীপথে নিরাপত্তা প্রদানঃ মাওয়া প্রান্তেঅবস্থিত পদাতিক ব্যাটালিয়নটি মাওয়াপ্রান্তে ১ নম্বর পিলার হতে ধলেশ্বরী ব্রিজ পর্যন্ত ৭৭ বর্গ কি.মি. এবং জাজিরা প্রান্তেরপদাতিক ব্যাটালিয়ন পদ্মা ব্রিজের ৪১ নম্বর পিলার হতে পাঁচ্চর পর্যন্ত ১৩২ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় দিনে ও রাতে সার্বক্ষণিক সরাসরি নজরদারির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে। অন্যদিকে রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন ব্রিজ এর পূর্বে এবং পশ্চিমে ৬ কিলোমিটার নদীপথের নিরাপত্তা বিধান করে আসছে।

মাওয়া-জাজিরা ও নদীপথে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডকর্তৃক পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে নিরাপত্তা প্রদান।

মাওয়া-জাজিরা ও নদীপথে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডকর্তৃক পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে নিরাপত্তা প্রদান।

(২) শ্রমিক অসন্তোষ দমনঃ ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড প্রকল্প কাজের সঙ্গে নিয়োজিত ঊধ্বর্তন দেশি-বিদেশি কর্মকর্তা/প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা, সমন্বয় এবং এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে খাবারের মান উন্নয়ন, সঠিক সময়ে বেতন-ভাতা প্রদান, নামাজের বিরতিসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে। সেতু কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে ৯টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা দমন করা হয়েছে।

(৩) শ্রমিকদের নিরাপত্তাঃ পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান, চিকিৎসা সহায়তা এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় পূর্বক কোভিড ভ্যাকসিন আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়া প্রকল্পের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজের সময় যাতে কোন শ্রমিক সেফটি গিয়ার্স এর অভাবে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার সম্মুখীন না হয় এ বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড কর্তৃক শ্রমিক অসন্তোষ দমনে গৃহীত পদক্ষেপন গৃহীত পদক্ষেপ।

৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড কর্তৃক শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে পদক্ষেপ।

(৪) অগ্নিনির্বাপনঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রকল্প এলাকায় অগ্নিকাণ্ড রোধকল্পে নিয়মিত অগ্নিনির্বাপন সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্প এলাকা ও তদসংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে এবং বড় ধরণের ক্ষতিসাধন থেকে জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

(৫) নির্মাণ সামগ্রী পাচার রোধঃ সেনাসদস্যরা পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ছোট বড় অসংখ্য পাচারকারী (রড, লোহার এঙ্গেল, ব্যাটারি, ক্রেনের তার এবং তৈল চুরি) আটক করে এবং তাদেরকে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। এর মাধ্যমে প্রভূত অর্থনৈতিক ক্ষতি পরিহার করা সম্ভব হয়।

(৬) অবৈধ প্রবেশকারীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণঃ দেশি-বিদেশি নাগরিকগণের দ্বারা পদ্মা সেতুর ক্ষতিসাধন, প্রকল্প এলাকায় বিস্ফোরক স্থাপন, প্রকল্পের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার এবং বিদেশি প্রকৌশলীদের ক্ষতিসাধনসহ অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধকল্পে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তেস্থলপথ ও নদীপথে (মূল সেতু বরাবর চ্যানেল শুরুর পূর্ব পর্যন্ত) প্রয়োজনীয় জনবলসহ টহল পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধভাবে দেশি-বিদেশি প্রবেশকারীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ আসছে৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড।

(৭) অবৈধ বালু উত্তোলন এবং পদ্মা সেতুর ক্ষতি রোধঃ জেলা প্রশাসন, সেতু কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সাথে প্রয়োজনীয় সমন¡য়পূর্বক পদ্মা বহুমুখী সেতু এলাকায় নদীপথে প্রভাব বিস্তারসহ বালু উত্তোলন, নদীতে ড্রেজিং, পাইলিং, নোঙ্গর করা ও প্রকল্প এলাকায় অবৈধ প্রবেশ রোধকল্পে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

(৮) মাদক নিয়ন্ত্রণঃ সেনাবাহিনীর টহল ও নিরাপত্তা জোরদারের মাধ্যমে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প এবং তদসংলগ্ন এলাকায় মাদকদ্রব্যের (ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা) ব্যবসা সমূলে উৎপাটন করেছে সেনাবাহিনী।

(৯) উদ্ধারকার্যঃ পদ্মা সেতুর কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের যেকোন দুর্ঘটনায় উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে হাসপাতালে প্রেরণ এবং চিকিৎসা কার্যক্রম নিশ্চিত করছে সেনাবাহিনী। 

(১০) ইমারজেন্সী রেসপন্স দলঃ মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তেপদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে যেকোন উদ্ভুত পরিস্থিতি তাৎক্ষনিক মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও জনবলসহ ইমারজেন্সী রেসপন্স দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

(১১) ট্রাফিক ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণঃ পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার ভেতরে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক জাজিরা ও মাওয়ায় সেতু সংলগ্ন অ্যাপ্রোচ রোড ও সার্ভিস এরিয়া এবং ঢাকা হতে মাওয়া ও জাজিরা হতে ভাঙ্গা পর্যন্ত  ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেছে।

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের একটি স্বপ্নের নাম-আজ এটি এক দৃশ্যমান বাস্তবতা। এটি জাতির সমৃদ্ধির প্রতীক। এই ধরনের একটি স্থাপনা রক্ষা করা আমাদের সকলের পবিত্র দায়িত্ব। পদ্মা সেতুর সার্বিক নিরাপত্তায় পেশাদার ও দেশপ্রেমী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা তাই একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক প্রজেক্টের কাজএখনো চলমান রয়েছে। এই প্রবন্ধে পদ্মা সেতু নির্মাণাধীন সময়কালীননিরাপত্তার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। পরবর্তীতে পদ্মা সেতু উদ্বোধন ও পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে বাংলাদেশের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সেনাবাহিনীর ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দৃঢ় প্রত্যয়ী।

এছাড়া সকল প্রয়োজনে জাতির আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদা তৎপর ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ সেতু বিভাগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ, মুন্সীগঞ্জ, শরিয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার প্রশাসন ও পুলিশ এবং অন্যান্য সকল সংস্থার সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পালন করতে পেরেছেবলে সকলের নিকট বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতেও দেশের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

লেখক: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন উর রশীদ।

ইত্তেফাক/এএএম