শৈলকুপার তুফান ও চিতলমারীর রাজাবাবুকে দেখতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। তুফান নামে ষাঁড়টির মালিক জানান, এর ওজন ৩০ মণ হবে। তিনি এর দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। অপরদিকে চিতলমারীতে একই ওজনের ‘রাজাবাবুর’ দাম হাঁকা হচ্ছে ৯ লাখ টাকা।
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহের শৈলকুপার মজুমদার পাড়ায় এক বিশাল দেহি ষাঁড়ের শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা করছেন মালিক নুর আলম। ষাঁড়টির নাম তুফান। উচ্চতা ৬ ফুট এবং লম্বা ১১ ফুট। মালিক জানান, ওজন ৩০ মণ হবে। নুর আলম বলেন, ষাঁড়ের বয়স তিন বছর। উন্নত জাতের গাভির বাচ্চা তুফান। তিনি লালন পালন করে আসছেন। এবার কোরবানি হাটে তুলবেন বিক্রির জন্য। প্রতিদিন ষাঁড়টির খাবার কিনতে প্রায় ৫০০ টাকা লাগে। কাঁচা ঘাস, গমের ভূষি, চালের খুদ খেতে দিতে হয়। গরম থেকে রক্ষার জন্য দিনরাত ফ্যান চলে। মশার কামড় থেকে রক্ষার জন্য গোয়ালের চারিদিকে মশারি টাঙানো আছে। এর দাম হাঁকছেন তিনি ১৫ লাখ টাকা। শুধু তুফান নয়, এরকম চোখ জুড়ানো কয়েকশ কোরবানির পশু ঝিনাইদহ জেলার গোয়ালে গোয়ালে শেষ মুহূর্তের লালন পালন চলছে। ইতিমধ্যে জেলার কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠতে শুরু হয়েছে।
জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিত্ কুমার সরকার জানান, এবার কোরবানির বাজার ধরতে ঝিনাইদহ জেলায় প্রায় ৯০ হাজার গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত থাকবে। ব্যাপারিরা এসব গরু কিনে দেশের বিভিন্ন শহরে নিয়ে যাবেন। ইতিমধ্যে কোরবানির পশু হাটগুলোতে প্রচুর গরু বিক্রির জন্য উঠছে। তবে কেনাবেচা জমে উঠেনি। খামারিরা বলছে, গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি। এতে তাদের পোষাচ্ছে না। কালীগঞ্জের খামারি তানভির হোসেন প্রিন্স জানান, তার খামারে ১৩টি গরু আছে। কিন্তু যে হারে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে তাতে গরু পালন লাভজনক হচ্ছে না। শৈলকুপার খামারি নাজের আলি বলেন, ১০-১২ বছর ধরে কোরবানির বাজারে বিক্রির জন্য গরু পালন করে আসছেন। এবারও পাঁচটি গরু মোটাতাজা করেছেন। ব্যাপারি যে দাম দিতে চাচ্ছে তাতে পোষাচ্ছে না। গোখাদ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে।
চিতলমারী (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, রাজাবাবু নামে ৩০ মণ ওজনের একটি ষাঁড়কে দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে উৎসুক জনতা। আসন্ন কেরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাড়তি যত্ন নেওয়া হচ্ছে রাজাবাবুর। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরকচুরিয়া গ্রামের মোকলেচ শেখ নামে এক খামারি রাজাবাবুকে পালন করছেন। এ বছর কোরবানির হাটে তিনি এটি বিক্রি করতে চান। মোকলেচ শেখের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি গবাদিপশু পালন করে আসছেন। বিশেষ করে কোরবানির ষাঁড় পালন করে তিনি লাভবান হয়েছেন। এ বছরও আসন্ন কোরবানিকে ঘিরে রাজাবাবু নামে একটি ষাঁড়কে বাজারে তুলতে চান। এটি তার খামারের অন্যতম। গত তিন বছর ধরে তিনি এটিকে লালন-পালন করে আসছেন। প্রতিদিন ষাঁড়টির খাবারের জন্য খৈল, ভূষি মিলিয়ে প্রায় দেড় থেকে ২ হাজার টাকা ব্যয় করেন। রাজাবাবুর দাম হেঁকেছেন ৯ লাখ টাকা। উপযুক্ত ক্রেতা পেলে তিনি রাজাবাবুকে বিক্রি করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।