শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ব্যাঙ হত্যার দায়ে দুই শিকারিকে অর্থদণ্ড

আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২২, ১৫:১৫

বিল থেকে অর্ধশতাধিক কোলা ব্যাঙ ধরে খাওয়ার জন্য পা কেটে হত্যার দায়ে দুই যুবককে ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার (৩ জুলাই) বিকালে  তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের অর্থদণ্ড দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালা উপজেলার আটারই গ্রামের ছিদাম দাশের ছেলে আশুতোষ দাশ এবং দুলাল দাশের ছেলে সরজিৎ দাশ পার্শ্ববর্তী ঢেঙ্গার বিলে রবিবার সকাল থেকে বিপন্ন প্রজাতির কোলা ব্যাঙ ধরা শুরু করেন। এদিন সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় শত শত ব্যাঙ বিলের নতুন পানিতে প্রজনন ও ডিম ছাড়ার জন্য জড়ো হয়। এই সুযোগে আশুতোষ ও সরজিৎ ব্যাঙের পায়ের মাংস খাওয়ার জন্য শতাধিক ব্যাঙ ধরতে থাকেন। এসময় স্থানীয় কৃষকরা তাদের বাধা দিলে তারা কৃষকদের হুমকি দেওয়াসহ অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।

একপর্যায়ে বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করা তালার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়াইল্ডলাইফ মিশনের সভাপতি সাংবাদিক জুলফিকার রায়হান, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ বিশ্বাসসহ সংগঠনের কর্মীরা সংবাদ পেয়ে তৎক্ষণাৎ সেখানে হাজির হন। এসময় তারা ঢাকা বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক ও ওয়াইল্ডলাইফ মিশনের প্রধান উপদেষ্টা মোল্য রেজাউল করিম, বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিদর্শক আবদুল্লাহ-আস-সাদিক, বন বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান চৌধুরী এবং ঢাকা বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্য শেখ জসিমের সার্বিক দিক নির্দেশনায় আটারই গ্রামে অভিযান চালিয়ে দুপা করে কেটে রাখা অর্ধশতাধিক জীবিত ও মৃত ব্যাঙসহ শিকারিদের আটক করে রাখেন। 

এসময় মানবাদিকার কর্মীসহ এলাকার শত শত নারী, পুরুষ ও শিশু ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা শিকারিদের শাস্তি দাবি করেন। 

এর আগে তালা থানার ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান সংবাদ পেয়ে সেখানে পুলিশ প্রেরণ করলে এসআই সৈকত মল্লিক ব্যাঙ শিকারিদের আটকসহ অর্ধশতাধিক হত্যার শিকার কোলা ব্যাঙ উদ্ধার করেন। 

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘ব্যাঙ পরিবেশের জন্য খুবই প্রয়োজন। ব্যাঙ ধরা, শিকার করা ও হত্যা করা বা খাওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।’ এধরনের অপরাধ না করার জন্য তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান।

বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিদর্শক আবদুল্লাহ-আস-সাদিক বলেন, ‘বাংলাদেশে এই প্রথম উভচর প্রজাতির বন্যপ্রাণী অপরাধ সনাক্তকরণ ও শাস্তি প্রদান।’ এসময় ওয়াইল্ডলাইফ মিশনের সদস্যসহ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

ইত্তেফাক/মাহি