নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করার ঘটনায় গ্রেফতার ৪ তরুণকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত ও পুলিশের ওপর হামলা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্বে) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মামলার অন্যতম আসামি শাওন, রিমন, মনিরুল ও রনির ৩দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়েছে। পরে আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন। এছাড়া সর্বশেষ গ্রেফতার হওয়া নূর নবীর বিরুদ্ধে ৩ দিনের রিমান্ড শুরু হয়েছে।
ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস লাঞ্ছিতের ঘটনায় ওই কলেজের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক আক্তার হোসেন রিংকু এবং কলেজ পরিচালনা পরিষদকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনা সরকারি ব্রজলাল (বিএল) কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মো. রহমাতুল্লাহ রনির ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বুধবার (৬জুন) রাতে ২২৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান।
নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে গত ১৭জুন বিতর্কিত বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে পোস্ট দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ পোস্ট দেওয়ার পর গত ১৮ জুন সকালে কলেজে আসেন রাহুল। এরপর তার বন্ধুরা পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও পোস্ট মুছেনি রাহুল। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানান। এক পর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোঁড়ে। ঘটনার সময় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও কর্মকর্তাদের সামনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর গলায় জুতার মালা পরিয়ে পুলিশ পাহারায় পুলিশের গাড়িতে উঠানো হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র রাহুল দেব রায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় জেলহাজতে আছে।