পশুর হাট শেষ হলেও এখনো হাটে হাটে পড়ে আছে আবর্জনা। নেওয়া হয়নি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোনো উদ্যোগ। এমনকি পশু বেঁধে রাখার বাঁশও খোলা হয়নি। হাট শেষ হওয়ার পাঁচ দিন পরও পরিষ্কার করা হয়নি এলাকা। এতে ময়লা-আবর্জনায় জীবাণু ছড়ানোর পাশাপাশি বৃষ্টি হলে মশার লার্ভা জন্মানোরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে শুক্রবার বিভিন্ন অস্হায়ী পশুর হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
উত্তর সিটি করপোরেশনের অস্হায়ী ১৭ নম্বর সেক্টর হাট ও কাওলা শিয়ালডাঙ্গা হাটে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল এলাকাজুড়ে পড়ে আছে পশু খাদ্যের পরিত্যক্ত অংশ। পশুর বর্জ্য ও নানা আবর্জনায় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। এসব এলাকা যেন এখন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। ছোট ছোট গর্ত তৈরি হয়েছে সেখানে। বৃষ্টি হলেই পানি জমা হবে গর্তে। আর তখন পরিস্হিতি আরো খারাপ হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
অন্যদিকে হাটে পশু বাঁধার জন্য যে বাঁশ বাঁধা হয়েছিল, সেগুলোও এখনো খোলা হয়নি। ১৭ নম্বর সেক্টরের হাটে গিয়ে দেখা যায়, পুরো হাটে এখনো সব বাঁশ ঠিক আগের মতোই আছে। বিশাল এলাকা জুড়ে পড়ে আছে খড়। এমনকি খড়ের স্তূপ পড়ে আছে সড়কের ওপরেই। ইতোমধ্যে সেগুলো পচে গেছে। পশুর ময়লাও পড়ে আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। শিয়ালডাঙ্গা হাটে বাঁশ খোলা হলেও পশু খাদ্যের পরিত্যক্ত অংশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। স্হানীয়দের অভিযোগ, এর ফলে অনেক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। চারদিকে মাছি উড়ছে। এমনিতেই মশার উত্পাত, তার সঙ্গে এখন মাছিও যোগ হয়েছে।
১৭ নম্বর সেক্টরের পাশে ঘুরতে আসা সাইদুর রহমান বলেন, ‘হাট শেষ হলেও কোনো ধরনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ময়লা-আবর্জনা যেভাবে ছিল, সেভাবেই পড়ে আছে। বাঁশও খোলেনি। হাটের ইজারাদারদের দায়িত্ব নিয়ে এসব পরিষ্কার করার কাজটি করতে পারে। হাসিল বাবদ তো আর কম টাকা আদায় হয়নি। তবুও এসব এখনো পড়ে আছে।’
সিটি করপোরেশন থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির হাটসহ রাজধানী থেকে পশুর বর্জ্য পরিষ্কার করার কথা বলা হয়। গত ৯ জুলাই আফতাবনগর পশুর হাট পরিদর্শন শেষে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, হাট চলাকালে মশার ওষুধ ছিটান হয়নি। কারণ এতে পশুর ক্ষতির ঝুঁকি ছিল। হাটের কার্যক্রম শেষ হলে এই এলাকাগুলোতে মশা নিধনে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পশুর হাটের আশপাশের এলাকায় মশার উত্পাত বেড়ে গেছে। এ অবস্হায় হাট শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিচ্ছন্নতার কাজ অবশ্যই শেষ করতে হবে। এমন ঘোষণার পরও এখনো সরছে না হাটের বর্জ্য।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে যতটা তত্পর ছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা, ঠিক ততটাই উদাসীন তারা হাটের বর্জ্য অপসারণের ব্যাপারে। হাট শেষ হলেও সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ হয়নি। হাটসংশ্লিষ্ট এলাকাতেই অনেক পশুর কোরবানি হয়েছে।
অন্যদিকে পশুর হাটে ইজারাদারদের জন্য ১৬টি নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। সেখানেও বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি করা যাবে না। নিরাপদ বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্হা নিশ্চিত করতে হবে। এর পরও হাটের বর্জ্য সরেনি এলাকা থেকে। উত্তর সিটি করপোরেশনের অস্হায়ী হাট ১৭ নম্বর সেক্টরের ইজারা পান নূর হোসেন। তিনি বলেন, বর্জ্যসহ মালামাল পরিষ্কারের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই তা শেষ করা হবে।